‘১০০ কোটি মানুষ আপনার সাথে…’, ট্রাম্পের সাথে উত্তেজনার মধ্যেই এলন মাস্ক কেন চীনের সমর্থন পাচ্ছেন?

আমেরিকার বিখ্যাত বিলিয়নেয়ার প্রযুক্তি উদ্যোক্তা এলন মাস্ক এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে তিক্ততা এখন প্রকাশ্যে রাজনৈতিক লড়াইয়ে রূপান্তরিত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এই বিতর্কের সূত্রপাত হয় যখন মাস্ক ট্রাম্পের নতুন কর এবং ব্যয় সংক্রান্ত বিলটিকে ‘ঘৃণ্য ও চরম অন্যায়পূর্ণ’ বলে তীব্র সমালোচনা করেন।
তিনি শুধু এই বিলটিকে দেশের জন্য বিপজ্জনক বলেই ক্ষান্ত হননি, বরং ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের (Impeachment) পরামর্শও দেন। এর পাশাপাশি, মাস্ক অভিযোগ করেন যে মার্কিন সরকার জেফরি এপস্টাইনের সাথে তাঁর কথিত সম্পর্ককে ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন করছে।
মাস্ক কি ‘আমেরিকা পার্টি’ গড়বেন?
এই সংঘাতের নতুন মোড় আসে যখন মাস্ক ঘোষণা করেন যে, যদি ট্রাম্পের ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’ সিনেটে পাস হয়ে যায়, তাহলে তিনি নিজেই একটি রাজনৈতিক দল গঠন করবেন, যার নাম হবে ‘আমেরিকা পার্টি’ (America Party)। এই বিলটি ইতিমধ্যেই সিনেটে পাস হয়ে গেছে এবং মাস্কের এই ঘোষণা এখন বিশ্বব্যাপী আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। মাস্ক এই বিলটিকে ‘পাগলামি’ আখ্যা দিয়ে সতর্ক করেছেন যে, এটি আমেরিকার জাতীয় ঋণ ৩.৩ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বাড়িয়ে দেবে।
চীনে মাস্কের ব্যাপক সমর্থন
বিলটি পাস হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চীনের প্রধান সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ওয়েইবো (Weibo)-তে #MuskWantsToBuildAnAmericaParty হ্যাশট্যাগটি ট্রেন্ড করতে শুরু করে। এখন পর্যন্ত এটি ৩.৭ কোটিরও বেশি বার দেখা হয়েছে। সেখানকার ব্যবহারকারীরা মাস্কের প্রযুক্তিগত ভাবনা এবং রাজনৈতিক সাহসের প্রশংসা করছেন। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন – ‘যদি এলন মাস্ক একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন, তবে তার প্রযুক্তিগত চিন্তা রাজনীতিতে নতুন শক্তি আনতে পারে।’ আরেকজন ব্যবহারকারী বলেছেন – ‘যখন সীমা অতিক্রম হয়ে যায়, তখন সহ্য করা বন্ধ করা উচিত।’ তবে সবচেয়ে বেশি ভাইরাল হওয়া মন্তব্যটি ছিল – ‘মাস্ক ভাই, আমাদের এক বিলিয়ন মানুষ আপনার পাশে আছে।’
চীনে মাস্কের জনপ্রিয়তা নতুন কোনো ঘটনা নয়। টেসলা চীনের সেইসব নির্বাচিত পশ্চিমা সংস্থাগুলির মধ্যে অন্যতম, যা সেখানকার দেশীয় ব্র্যান্ডগুলির সাথে সরাসরি প্রতিযোগিতা করে। এছাড়াও, ওয়াল্টার আইজ্যাকসন দ্বারা লেখা তাঁর জীবনী চীনে বেস্টসেলার হয়েছে। মাস্কের মা, মেয়ে মাস্কও সেখানে একজন পরিচিত ব্যক্তিত্ব। পাশাপাশি, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং-এর সাথেও তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করা হয়।
ট্রাম্পের আক্রমণ এবং মাস্কের কড়া প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল (Truth Social)-এ কটাক্ষ করে লিখেছেন – ‘যদি সরকারের ভর্তুকি না পাওয়া যায়, তাহলে মাস্ককে তার দোকান বন্ধ করে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেতে হবে।’ এর জবাবে মাস্কও দেরি না করে পাল্টা আক্রমণ করে বলেছেন, ‘যদি সাহস থাকে তো সমস্ত ভর্তুকি বন্ধ করে দাও। আমি নিজেই বলছি, সবকিছু বন্ধ করে দাও। এখনই।’