ফোনে প্রতিপক্ষ দেশের নেতাকে ‘কাকু’ ডেকে বিপাকে, গদিচ্যুত থাই প্রধানমন্ত্রী

ব্যাঙ্কক: প্রতিপক্ষ দেশের প্রভাবশালী নেতাকে ‘কাকু’ বলে সম্বোধন করে চরম বিপাকে পড়লেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনওয়াত্রা। তার এই আপাত সৌহার্দ্যপূর্ণ বার্তাই কাল হয়ে দাঁড়াল। মঙ্গলবার সাংবিধানিক আদালত তাকে বরখাস্ত করেছে।
এই পদক্ষেপের পক্ষে ৯ জন বিচারপতির মধ্যে ৭ জন সম্মতি দেন। তবে ৩৯ বছর বয়সী সিনওয়াত্রাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। তার জবাবে আদালত সন্তুষ্ট না হলে তাকে পাকাপাকিভাবে পদ থেকে সরে যেতে হবে। এই অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে দেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুংরুংয়াংকিত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। গত এক বছরে থাইল্যান্ডে এটি দ্বিতীয় ঘটনা, যেখানে সরকারি নীতি লঙ্ঘনের দায়ে প্রধানমন্ত্রীকে পদচ্যুত হতে হলো।
সিনওয়াত্রার ফোনালাপ ফাঁসের পর থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। সম্প্রতি কম্বোডিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা সেদেশের সেনেটের বর্তমান প্রেসিডেন্ট হুন সেনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে ফোনে কথা বলেন তিনি। সেই ফোনালাপে তাকে হুন সেনকে ‘আঙ্কল’ বলে সম্বোধন করতে শোনা যায়। এরপর থেকেই বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ শুরু করে। দেশের এই ‘অপমান’ জনগণও ভালোভাবে নেয়নি। নাগরিকদের একটি বড় অংশ বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সেনাবাহিনীও তার এই ধরনের কথাবার্তা ভালোভাবে নেয়নি।
পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে বুঝতে পেরে সিনওয়াত্রার সরকারের শরিক দল ভুমজাইথাই পার্টি সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে একদল সেনেটর আদালতের দ্বারস্থ হন। দেশজুড়ে বিক্ষোভের মুখে সিনওয়াত্রা জনগণের কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেন। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত আদালতের রায়ে তাকে পদত্যাগ করতে হলো। আদালতের রায় মেনে নিয়ে সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশকে রক্ষা ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই আমার মূল লক্ষ্য ছিল। এর মধ্যে অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই।”