‘এক বিহারী সব পর ভারী’! মাত্র ১২ মাসে ২৪৬৩ কোটির সংস্থা তৈরি, কাজ জানলে চমকে যাবেন!

ভারতে বিনিয়োগ এবং সঞ্চয় সম্পর্কে মানুষের ভাবনা দীর্ঘদিন ধরে ঐতিহ্যবাহী। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে, সোনাকে সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে দেখা হয়। এই ধারণাকেই নতুন রূপ দিয়েছেন বিহারের নালন্দা জেলার মিসবাহ আশরাফ। তিনি ‘Jar’ নামক একটি অভিনব ফিনটেক সংস্থা শুরু করেছেন, যা ১ কোটি ১০ লক্ষেরও বেশি ভারতীয়কে প্রতিদিনের সঞ্চয় এবং আধুনিক বিনিয়োগ পদ্ধতির সঙ্গে যুক্ত করেছে।
কঠিন পথচলা থেকে সাফল্যের শিখরে
মিসবাহ আশরাফের শৈশব কেটেছে আর্থিক প্রতিকূলতার মধ্যে। তার বাবা ছিলেন শিক্ষক এবং মা গৃহিণী। সীমিত সম্পদেই বড় হওয়া মিসবাহ সবসময়ই বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখতেন। পড়াশোনার সময়ই তার মধ্যে উদ্যোগপতি হওয়ার নেশা জন্ম নেয় এবং তিনি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষেই পড়া ছেড়ে দেওয়ার মতো কঠিন কিন্তু সাহসী সিদ্ধান্ত নেন। কলেজ ছাড়ার পর মিসবাহ প্রথম স্টার্টআপ Cibola শুরু করেন, কিন্তু চার মাসের মধ্যেই এই সংস্থা বন্ধ হয়ে যায়।
এটি ছিল তার জীবনের প্রথম বড় ব্যর্থতা, কিন্তু তিনি এতে হার মানেননি। তিনি বিশ্বাস করেন যে, ব্যর্থতাই আসল শিক্ষা দেয়। Cibola-এর পর তিনি ফ্যাশন এবং কনটেন্ট ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম Marsplay শুরু করেন, যা বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং একটি বড় সংস্থা এটিকে অধিগ্রহণ করে নেয়। এই সাফল্য থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ২০২০ সালে, মহামারীর কঠিন সময়ে, Jar-এর ভিত্তি স্থাপন করেন।
Jar-এর অসাধারণ সাফল্য
Jar এমন একটি অ্যাপ, যা মানুষকে ছোট ছোট অর্থ প্রতিদিনের সঞ্চয় হিসেবে সোনায় বিনিয়োগ করার বিকল্প দেয়। এর সুবিধা বিশেষভাবে তাদের কাছে পৌঁছেছে, যারা আগে বিনিয়োগের নামে ভয় পেতেন। মাত্র দেড় বছরে Jar-এর ১.১ কোটিরও বেশি ব্যবহারকারী হয়েছে এবং সংস্থাটি এখন পর্যন্ত ৫৮ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৪৭৬ কোটি টাকা) বিনিয়োগ সংগ্রহ করেছে।
সম্প্রতি সংস্থাটি ৩০০ মিলিয়ন ডলার (২,৪৬৩ কোটি টাকা)-এর মূল্যায়ন অর্জন করেছে। এছাড়াও, রিপোর্ট অনুযায়ী মিসবাহ আশরাফের ব্যক্তিগত সম্পদ প্রায় ২০ মিলিয়ন ডলার (১৬৪ কোটি টাকা) অনুমান করা হয়েছে। এই সংখ্যাগুলো তার কঠোর পরিশ্রম, দূরদৃষ্টি এবং সাহসী সিদ্ধান্তের প্রমাণ।