ইসলামের সেই রহস্য যা ৯০% মুসলমান জানেন না! ‘আল্লাহু আকবার’-এর আসল অর্থ যা আপনার নামাজ বদলে দেবে!

ইসলামের সেই রহস্য যা ৯০% মুসলমান জানেন না! ‘আল্লাহু আকবার’-এর আসল অর্থ যা আপনার নামাজ বদলে দেবে!

ইসলাম ধর্মে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে। এর মধ্যে আজান ও নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। আজানে ‘আল্লাহু আকবার’ উচ্চারণ করা হয়। ইসলাম ধর্মে আজানে ‘আল্লাহু আকবার’ উচ্চারণের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। অনেক মুসলমানই হয়তো জানেন না যে, আজানে আল্লাহর নামের সঙ্গে ‘আকবার’ শব্দটি কেন ব্যবহার করা হয়। আসলে আজানে যে ‘আকবার’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়, তার সাথে সম্রাট আকবরের কোনো সম্পর্ক নেই।

আজানে কেন বলা হয় ‘আল্লাহু আকবার’?
আসলে, ‘আল্লাহু আকবার’ আরবি ভাষার একটি বাক্যাংশ। এখানে ‘আল্লাহু’-এর অর্থ স্পষ্ট যে, মুসলমানরা তাদের সৃষ্টিকর্তাকে আহ্বান করেন। ‘আল্লাহু’-এর পরে ‘আকবার’ যোগ করে ‘আল্লাহু আকবার’ বলার কারণ হলো, আরবিতে ‘আকবার’ শব্দের অর্থ হলো ‘সবচেয়ে বড়’ বা ‘সবচেয়ে মহান’। যখন আজানে ‘আল্লাহু আকবার’ বলা হয়, তখন তার অর্থ হয়— “আল্লাহই সবচেয়ে বড়, আল্লাহই সবচেয়ে মহান।” এই কারণেই আজান দেওয়ার সময় ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি উচ্চারণ করা হয়।

প্রতিদিন পাঁচবার আজান
ইসলাম ধর্মে প্রতিদিন পাঁচবার আজান দেওয়া হয়। ইসলামে আজানকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ইসলাম মনে করে যে, প্রতিটি মুসলমানের আজান পড়া উচিত। তাই ইসলামিক বিশ্বাস অনুযায়ী, মুসলমানরা তাদের দিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ডাকার জন্য উচ্চস্বরে যে শব্দগুলো ব্যবহার করেন, তাকেই আজান বলা হয়। মুসলমানরা দিনে পাঁচবার এটি পালন করেন। কিন্তু আপনি কি জানেন যে, ইসলামে আজানকে কেন এত বিশেষ বলে মনে করা হয়? এর আসল অর্থ কী? যদি না জানেন, তবে সামনে জেনে নিন।

ইসলাম অনুসারে, প্রতিদিন যে আজান দেওয়া হয় তা হলো— “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার”। এর অর্থ হলো আল্লাহ সবচেয়ে বড়। হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মতে, যখন কেউ আজান দেয়, তখন সাধারণ মুসলমানদের উচিত এটি পুনরাবৃত্তি করা। আজানে মুয়াজ্জিন বলেন যে, “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া আর কারো ইবাদত করা উচিত নয়।” এরপর আজানে মুয়াজ্জিন বলেন, “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর দূত, তিনি আল্লাহর পুত্র নন।”

এরপর মুয়াজ্জিন বলেন, “তোমরা সবাই এখন আল্লাহর ইবাদত করার জন্য এসো, সালাতের পদ্ধতিতে।” এরপর মুয়াজ্জিন বলেন, “যদি তোমরা মনে করো যে দুনিয়াতে ব্যবসা করে সফল হবে, তবে আসল সাফল্য এটা নয়। আসল সাফল্য তো হলো যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, এখন তার ইবাদতের সময় এসেছে।” এরপর সেই সমস্ত মানুষকে বলা হয়, তোমরা আল্লাহর জন্য আসো, ইবাদতের জন্য এসো বা না এসো, কিন্তু আল্লাহই সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী।

ইসলামে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া জরুরি
উপরে আমরা আজান এবং ‘আল্লাহু আকবার’ সম্পর্কে জেনেছি। এবার নামাজের গুরুত্বও বুঝে নেওয়া যাক। ইসলামের বিশেষজ্ঞদের স্পষ্ট মত হলো, ইসলাম ধর্মে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া জরুরি। এই কারণেই যারা সত্যিকারের মুসলমান, তারা সবাই প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। এখন রমজান মাস চলছে। এমন পরিস্থিতিতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ছাড়াও তারাবীহ-এর নামাজ আদায় করা হয়। এর ইসলাম ধর্মে অনেক গুরুত্ব রয়েছে, কিন্তু নামাজ পড়ার সময়ও মানুষকে অনেক বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে। সেগুলো উপেক্ষা করলে আপনার নামাজ আসাম্পূর্ণ থেকে যায়। নামাজ পড়ার সময় ছোট থেকে ছোট বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হয়, কারণ এ ছাড়া আপনার নামাজ কবুল হয় না। ইসলাম ধর্মে আল্লাহ এবং তার রাসূলের উপর বিশ্বাস আনার পর সকল মানুষের জন্য নামাজ পড়া জরুরি হয়ে যায়। পুরুষ হোক বা মহিলা, গরিব হোক বা ধনী, সকলের জন্য নামাজ পড়া জরুরি। নামাজকে আরবিতে সালাহ বলা হয়, যেখানে আল্লাহর ইবাদত অর্থাৎ পূজা করা হয় এবং কুরআন পড়া হয়। উল্লেখ্য, নামাজের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অবস্থান থাকে, যা মনকে শান্তি দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের শারীরিক উপকারও দেয়। তাই নামাজ খুব মনোযোগ দিয়ে পড়া হয়, কারণ এই ইবাদত হৃদয় দিয়ে করা হয়।

নামাজ পড়ার আগে সঠিক পদ্ধতি জেনে নিন
নামাজে মনোযোগ দেওয়া খুব জরুরি, কারণ যখন আমরা সালাহ আদায় করি, তখন আমাদের মুখ কিবলার দিকে থাকে। যখন মানুষ মসজিদে নামাজ পড়ে, তখন ইমাম সাহেবের মুখ কিবলার দিকে থাকে। তাই মুসলমানদের কিবলার দিকে মুখ করতে অসুবিধা হয় না, কিন্তু যদি আপনি একা নামাজ পড়েন, তবে কিবলার দিক নির্ণয় করা জরুরি। এছাড়াও, নামাজের সময় এদিক-ওদিক তাকানো উচিত নয়।

যেমন আপনি নিজেকে পবিত্র রাখেন, ঠিক তেমনি নামাজ পড়ার স্থানও পবিত্র হওয়া উচিত। আপনাকে এই বিষয়টির দিকে মনোযোগ দিতে হবে যে, নামাজ পড়ার আগে পরিষ্কার কাপড় পরুন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন স্থানেই নামাজ পড়ুন। কারণ যে স্থানে আপনি নামাজ আদায় করতে যাচ্ছেন, তার পবিত্র থাকা জরুরি। যদিও জমিনের উপর আপনি যেকোনো স্থানে নামাজ পড়তে পারেন, কারণ জমিন পবিত্র, কিন্তু যে স্থানে নামাজ পড়বেন সেখানে কোনো প্রকার নোংরা থাকা উচিত নয়।

ইসলাম ধর্মে নামাজের ১৩টি ফরজ (আবশ্যিক বিষয়)
আপনাকে জানিয়ে রাখি যে, ইসলাম ধর্মে নামাজের ১৩টি ফরজ রয়েছে। নামাজের সময় এই ১৩টি ফরজ পালন করা জরুরি। নামাজের ১৩টি ফরজ হলো:

১. অযু বা স্নান
২. পবিত্র পোশাক
৩. পবিত্র স্থান
৪. সতর ঢাকা
৫. নামাজের সময়
৬. কিবলার দিকে মুখ করা
৭. নিয়ত
৮. নামাজ শুরু করার সময় তাকবীরে তাহরিমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলা
৯. দাঁড়ানো
১০. কিরাত অর্থাৎ কুরআন মাজিদ থেকে কিছু পড়া
১১. রুকু
১২. দুই সিজদা
১৩. নামাজের শেষে আত্তাহিয়াত পড়ার জন্য বসা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *