কুকুর কামড়ানোর পর র্যাবিস সংক্রমণ শরীরে ছড়িয়ে পড়া থেকে আটকাতে কী করবেন?

কেরলে র্যাবিসে ২ জনের মৃত্যুর পর তামিলনাড়ুর ডিরেক্টরেট অফ পাবলিক হেলথ অ্যান্ড প্রিভেন্টিভ মেডিসিন সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য কঠোর নির্দেশিকা জারি করেছে। নির্দেশিকায় কুকুরের কামড়ের ধরন চিহ্নিত করতে সঠিক প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পোস্ট-এক্সপোজার প্রোফিল্যাক্সিস (PEP) সময় মতো এবং সঠিকভাবে প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এই PEP-এর মধ্যে র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবুলিন (RIG) এবং অ্যান্টি-র্যাবিস ভ্যাকসিন (ARV) অন্তর্ভুক্ত।
পাবলিক হেলথের ডিরেক্টর ডাঃ টি.এস. সেলভাভিনায়াগম স্বাস্থ্য আধিকারিকদের জানিয়েছেন যে র্যাবিস একটি মারাত্মক ভাইরাল রোগ যা মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। এর লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর বাঁচার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। তিনি আরও বলেন, র্যাবিসের ভ্যাকসিন তখনই জীবন বাঁচাতে পারে যখন এটি সঠিক উপায়ে এবং দ্রুত দেওয়া হয়। কেরলে দুটি ছেলের মৃত্যুর পর এই অ্যাডভাইজরি জারি করা হয়েছে, যাদের পথকুকুর কামড়েছিল।
কেন এই সংক্রমণ প্রাণঘাতী?
মৃতের কারণ হিসেবে PEP (পোস্ট-এক্সপোজার প্রোফিল্যাক্সিস) শুরু করতে দেরি, ক্যাটাগরি III-এর ক্ষেত্রে RIG (র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবুলিন) না দেওয়া, ক্ষতস্থান সঠিকভাবে পরিষ্কার না করা, এবং ভ্যাকসিনের ডোজ বাদ পড়া বা দেরিতে দেওয়াকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
র্যাবিস প্রতিরোধের উপায়:
১. স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, গভীর বা রক্তপাতযুক্ত ক্ষতস্থানে র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবুলিন (RIG) ভাইরাসকে আটকাতে অত্যন্ত জরুরি, বিশেষ করে প্রথম দিনগুলিতে, যতক্ষণ না ভ্যাকসিন থেকে অনাক্রম্যতা তৈরি হচ্ছে।
২. RIG ছাড়া, টিকাকরণের পরেও ভাইরাস স্নায়ুতন্ত্রে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে, মুখ বা মাথায় ক্ষত হলে অবিলম্বে এবং নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজন, কারণ কয়েক দিনের বিলম্বও ভ্যাকসিনকে অকার্যকর করতে পারে।
৩. র্যাবিস প্রতিরোধের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ হল কমপক্ষে ১৫ মিনিট ধরে সাবান ও জল দিয়ে ক্ষতস্থান ভালোভাবে ধোয়া।
অ্যাডভাইজরিতে বলা হয়েছে যে, শিশুদের কুকুর কামড়ালে র্যাবিসের ঝুঁকি বেশি থাকে, কারণ তাদের অনাক্রম্যতা দুর্বল হয় এবং তারা কামড়ানোর সঠিক তথ্য দিতে পারে না।
জরুরি পদক্ষেপ:
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কুকুরের কামড়ের তীব্রতা যাচাই করার জন্য নির্দেশিকা পুনর্ব্যক্ত করেছে:
ক্যাটাগরি I: প্রাণীকে স্পর্শ করা, খাবার খাওয়ানো বা পরিষ্কার ত্বকে চাটলে কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই।
ক্যাটাগরি II: ছোটখাটো আঁচড় বা ক্ষতস্থানে রক্তপাত না হলে র্যাবিস ভ্যাকসিন (ARV) দিতে হবে।
ক্যাটাগরি III: যদি কুকুরের কামড় বা আঁচড় থেকে রক্ত বের হয়, অথবা ফাটা ত্বকে চাটে, তবে র্যাবিস ভ্যাকসিন (ARV) এর সাথে র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবুলিন (RIG) দেওয়া বাধ্যতামূলক।