‘অপারেশন সিঁদুর’-এ সেনা মৃত্যুর সংখ্যা গোপন করল পাকিস্তান, মুখ খুলল কার্গিল যুদ্ধে শহিদ ক্যাপ্টেন শের খাঁকে নিয়ে!

‘অপারেশন সিঁদুর’-এ নিজেদের সেনাদের শাহাদাত গোপনকারী পাকিস্তানের ফিল্ড মার্শাল অসীম মুনীরের এখন কার্গিল যুদ্ধে নিহত পাকিস্তানি সেনাদের কথা মনে পড়ছে। কার্গিল যুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাদের শাহাদাত তো দূরে থাক, তাদের মৃতদেহ নিতেও দ্রুত রাজি ছিল না।
কেন পাকিস্তানের এই দ্বিচারিতা?
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মিডিয়া উইং আইএসপিআর (ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশনস) কার্গিল যুদ্ধ (১৯৯৯)-এ ভারতের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে নিহত ক্যাপ্টেন কর্নেল শের খাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। আইএসপিআর তাদের অফিশিয়াল ‘এক্স’ অ্যাকাউন্টে শের খাঁর ছবি শেয়ার করে পাকিস্তানি সেনাপ্রধান মুনীর এবং অন্যান্য সার্ভিস চিফদের পক্ষ থেকে ক্যাপ্টেনের বীরত্ব ও শাহাদাতকে সম্মান জানিয়েছে।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী একটি দীর্ঘ পোস্টে শের খাঁর সাহসিকতার প্রশংসা করেছে, কিন্তু এটি সেই একই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, যারা শের খাঁ এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নিহত অন্যান্য সেনাদের মৃতদেহ নিতে প্রথমে অস্বীকার করেছিল। এর ফলস্বরূপ, অনেক পাকিস্তানি সেনাকে ভারত কার্গিলেই ইসলামিক রীতিনীতি মেনে দাফন করেছিল।
চিঠি দেখে মৃতদেহ গ্রহণ
ক্যাপ্টেন শের খাঁ এবং তার অন্যান্য সঙ্গীদের আই-কার্ড এবং অন্যান্য পরিচয়পত্র দেখানোর পরেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাদের মৃতদেহ গ্রহণ করে। শের খাঁকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তখনই একজন সাহসী সৈনিক হিসেবে মেনে নেয়, যখন তার মৃতদেহের পকেটে একটি চিঠি পাওয়া যায়। এই চিঠিটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন ব্রিগেডিয়ার এমবিএস বাজওয়া লিখেছিলেন।
ব্রিগেডিয়ার এমবিএস বাজওয়া যুদ্ধের সময় শত্রু দেশের তরুণ অফিসার ক্যাপ্টেন শের খাঁর সাহসিকতায় অত্যন্ত প্রভাবিত হয়েছিলেন। ব্রিগেডিয়ার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে মৃতদেহ হস্তান্তরের সময় শের খাঁর (মৃতদেহের) পকেটে একটি চিঠি রেখে দিয়েছিলেন। এই চিঠিতে ব্রিগেডিয়ার ক্যাপ্টেন শের খাঁর বীরত্বের কথা উল্লেখ করেছিলেন। চিঠি পাওয়ার পরই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী শের খাঁকে তাদের সর্বোচ্চ বীরত্ব পুরস্কার ‘নিশান-এ-হায়দার’-এ ভূষিত করে। যদিও, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কার্গিল যুদ্ধে নিহত মোট সেনার সংখ্যা এবং বিস্তারিত বিবরণ কখনোই প্রকাশ করেনি।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এ এত পাকিস্তানি সেনার মৃত্যু
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময়ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১১ জন সেনার মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছিল। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নিহত সেনার সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ শুধুমাত্র কাশ্মীর উপত্যকা সংলগ্ন এলওসি (নিয়ন্ত্রণ রেখা)-তেই প্রায় ৬০ জন সেনা নিহত হওয়ার খবর ছিল।
পাশাপাশি, শাহবাজ এয়ারবেসে ভারতের ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর প্রায় ৫০ জন অফিসার এবং এয়ারম্যান নিহত হওয়ার খবর সামনে এসেছিল, কিন্তু পাকিস্তান প্রকাশ্যে মাত্র একজন স্কোয়াড্রন লিডার সহ মোট ০৫ জন বিমান সেনার মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছিল।