পুতিন-জিনপিংবিহীন ব্রিকস সম্মেলন! নীরব কেন ভারত? বিশ্বজুড়ে তোলপাড়!

ব্রাজিল ৬-৭ জুলাই ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করছে। এই বৈঠক এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন মাত্র দুই সপ্তাহ আগে ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্রিকসের নতুন সদস্য ইরানের ওপর সরাসরি সামরিক হামলা চালিয়েছে। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, এই ঘটনা আমেরিকার প্রভাবের তুলনায় ব্রিকসের সীমাবদ্ধতাও উন্মোচন করে দিয়েছে।
পুতিন এবং শি জিনপিংয়ের অনুপস্থিতির পাশাপাশি, ইরানের প্রেসিডেন্টও এই বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন না। আরও অনেক নেতার অনুপস্থিতির কারণে ব্রাজিল এবং লাতিন আমেরিকান মিডিয়া রিপোর্টে রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত এই বৈঠককে ‘কম অংশগ্রহণমূলক’ এবং এমনকি ‘খালি’ বলেও বর্ণনা করা হচ্ছে। ব্রাজিলের মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ব্রিকসের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নতুন সদস্য মিশরের প্রেসিডেন্টও এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন না।
ব্রিকসের জন্য অগ্নিপরীক্ষা
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো এর প্রধান সদস্য দেশগুলো এবং লাতিন আমেরিকার বামপন্থী রাজনীতি সহ এর অনেক সমর্থকের মধ্যে, ১১ সদস্যের ব্রিকসকে এখন পর্যন্ত একটি নতুন ‘বহুধ্রুবীয়’ বিশ্ব ব্যবস্থার প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এটিকে আমেরিকা এবং পশ্চিমা দেশগুলোর দশকের পুরনো আধিপত্য থেকে বিশ্বকে ভিন্ন পথে নিয়ে যাওয়ার মঞ্চ হিসেবে ধরা হয়েছিল।
তবে, ২১ জুন আমেরিকা ইরানের ওপর যে বিমান হামলা চালায় এবং তার আগে ইসরায়েলের লাগাতার বোমা বর্ষণ অভিযান স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, ব্রিকস এই মুহূর্তে ন্যাটো-র মতো কোনো শক্তিশালী পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তিভিত্তিক জোট নয়, বরং এটি একটি ঢিলেঢালা এবং অস্পষ্ট ভূ-রাজনৈতিক গোষ্ঠী মাত্র। এর সবচেয়ে শক্তিশালী সদস্য চীনই এমন একটি দেশ, যারা এই মঞ্চকে আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করতে চায়।
ব্রাজিলের বিদেশ মন্ত্রক গত ২৪ জুন পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিকসের পক্ষ থেকে একটি ‘যৌথ বিবৃতি’ জারি করে, যেখানে ১৩ জুন ২০২৫ থেকে ইরানের ওপর হওয়া সামরিক হামলা নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করা হয়। এতে এই হামলাগুলোকে ‘আন্তর্জাতিক আইন এবং সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সনদের লঙ্ঘন’ বলা হয়েছে। কিন্তু এই বিবৃতিতে ইসরায়েলের নাম নেওয়া হয়নি, এমনকি আমেরিকার সরাসরি নিন্দাও করা হয়নি।