ট্রাম্পকে এবার সরাসরি টক্কর দেবেন ইলন মাস্ক, নতুন দলের ঘোষণা, নাম রাখলেন ‘আমেরিকা পার্টি’!

মার্কিন রাজনীতিতে তৃতীয় দলের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই টেসলা এবং স্পেসএক্সের মালিক ইলন মাস্ক শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে একটি নতুন রাজনৈতিক দল ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। মাস্কের এক্স-এ একদিন আগে দল গঠন নিয়ে একটি জনমত জরিপের পরেই এই ঘোষণা আসে।
নিজের পোস্টে ইলন মাস্ক লিখেছেন, “২:১ ব্যবধানে আপনারা একটি নতুন রাজনৈতিক দল চেয়েছেন এবং আপনারা সেটি পাবেন! আজ ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠিত হচ্ছে যাতে আপনাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়া যায়।” এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এসেছে যখন ইলন মাস্ক এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। একসময় ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মাস্ক সম্প্রতি তার অত্যন্ত ব্যয়বহুল ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’-এর তীব্র সমালোচনা করেছিলেন।
ট্রাম্প-মাস্ক সম্পর্কের ভাঙন
ইলন মাস্ক ট্রাম্পের গত নির্বাচনী প্রচারে কোটি কোটি ডলার সাহায্য করেছিলেন। ট্রাম্পের মেয়াদে গঠিত “ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্মেন্ট এফিশিয়েন্সি” (DOGE)-এর প্রধানও ছিলেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি ট্রাম্পের ব্যাপক কর হ্রাস এবং ব্যয়বহুল বিলে স্বাক্ষর করার পর দুজনের সম্পর্ক পুরোপুরি ভেঙে যায়। ইলন মাস্ক সেই বিলকে আমেরিকার জন্য হুমকি বলে অভিহিত করেন এবং ঘোষণা করেন যে, যারা বিলটিকে সমর্থন করেছে, সেই সাংসদদের বিরুদ্ধে তিনি প্রকাশ্যে নির্বাচনী লড়াইয়ে অর্থ ব্যয় করবেন।
এর জবাবে ট্রাম্প হুমকি দেন যে, তিনি ইলন মাস্কের সংস্থাগুলোকে দেওয়া সরকারি ভর্তুকি বন্ধ করে দিতে পারেন। এমনকি তিনি বলেন যে, ইলন মাস্ককে আমেরিকা থেকে নির্বাসিত করার কথা তিনি বিবেচনা করতে পারেন। আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে ইলন মাস্ক এক্স-এ একটি পোল জারি করেছিলেন। তিনি মানুষকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “আপনি কি আমেরিকার দুই-দলীয় ব্যবস্থা থেকে স্বাধীনতা চান?” এই পোলে ১২ লাখেরও বেশি ব্যবহারকারী অংশ নেন এবং বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় তাদের সমর্থন দেন।
রিপাবলিকান পার্টি আশঙ্কা করছে যে, ইলন মাস্ক এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে এই ‘পাবলিক ব্রেকআপ’ তাদের দলকে ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে ব্যাপক ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। যদি ইলন মাস্ক তার প্রভাবশালী প্রযুক্তিগত নেটওয়ার্ক এবং অর্থশক্তি নিয়ে রিপাবলিকান প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নামেন, তবে দলের সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
ইলন মাস্ক আপাতত তার নতুন দলের বিস্তারিত এজেন্ডা প্রকাশ করেননি, তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন যে, এই দল রাজনৈতিক স্বাধীনতা এবং সিস্টেম থেকে মুক্তির কথা বলবে। উভয় প্রধান দলের (রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাট) ব্যর্থতাকে চ্যালেঞ্জ করবে। করদাতাদের অর্থের ব্যবহার, শাসনের দক্ষতা এবং প্রযুক্তি-ভিত্তিক শাসনের ওপর মনোযোগ দেবে।