“ডিকি দেখাও, লাইসেন্স দেখাও, আর পাঁচ হাজার দাও!” গোপাল খেমকার হত্যার পর পুলিশের উপর ক্ষোভে ফুঁসছেন পরিজনরা

“ডিকি দেখাও, লাইসেন্স দেখাও, আর পাঁচ হাজার দাও!” গোপাল খেমকার হত্যার পর পুলিশের উপর ক্ষোভে ফুঁসছেন পরিজনরা

“সবকিছু বন্ধ করে দিন…দেড় ঘণ্টা ধরে পুলিশকে কোনো খবর নেই। রাত সাড়ে এগারোটায় গুলি করা হয়েছে আর আপনার থানা একদম পাশে। এখান থেকে জিপসি বেরিয়ে গেল, তারাও জানে না আমাদের এলাকায় কী হয়েছে।” এমনই ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন নিহত গোপাল খেমকার পরিজনরা। তারা বলেন, “আমরা পুলিশ কন্ট্রোল রুমে জানিয়েছি। ১.৩৫ মিনিটে থানা এখানে পৌঁছেছে, যাদের মেডিভার্সলের ঠিকানা ভুল দেওয়া হয়েছিল। পাটনায় মেডিভার্সল তো একটাই আছে। গান্ধী ময়দান এলাকায় খুন হয়ে যায় আর দেড় ঘণ্টা ধরে পুলিশ কী করে? আমার তো এটাই মাথায় ঢুকছে না।” ক্ষুব্ধ পরিজনরা আরও বলেন, “সমস্ত টহল দলের কাজ হলো স্কুটার থামাও, ডিকি দেখাও, লাইসেন্স দেখাও। তারপর মোবাইল থেকে ছবি তুলবে আর বলবে পাঁচ হাজার টাকা দাও।” ঘটনার পর নিহত গোপাল খেমকার ছোট ভাই শংকর খেমকা পাটনা পুলিশের উপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন, যার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে।

পাটনায় শিল্পপতি গোপাল খেমকার হত্যাকাণ্ড ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
উল্লেখ্য, বিহারের সুপরিচিত শিল্পপতি গোপাল খেমকাকে শুক্রবার গভীর রাতে প্রায় পৌনে ১২টায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি গান্ধী ময়দান থানা এলাকার রামগুলাম চকের হোটেল পানাশের কাছে ঘটেছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বাইক আরোহী অপরাধীরা গোপাল খেমকার মাথায় গুলি করে এবং ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলির খোল এবং কার্তুজ উদ্ধার করেছে। গুলি লাগার পর আহত ব্যবসায়ী দ্রুত মেডিকভার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হত্যার খবর পেয়ে পাটনা সেন্ট্রাল এসপি দীক্ষা সহ অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। অপরাধীদের শনাক্ত করার জন্য পুলিশ এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে, তা গান্ধী ময়দান থানা থেকে মাত্র ৩০০ মিটার দূরে। তা সত্ত্বেও, খবর পাওয়ার প্রায় আধ ঘণ্টা পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পেরেছে। এই ঘটনা পাটনা পুলিশের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। বর্তমানে পুলিশ পুরো ঘটনার গভীর তদন্ত করছে। নিহত ব্যক্তি বাঁকিপুর ক্লাবের পরিচালক এবং একজন সুপরিচিত শিল্পপতি ছিলেন। তার অ্যাপার্টমেন্টের কাছেই মাথায় গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। জানা গেছে, গোপাল খেমকা শুক্রবার রাতে বাঁকিপুর ক্লাব থেকে নিজেই গাড়ি চালিয়ে ফিরছিলেন। কার্টরুকা নিবাসের কাছে পৌঁছানো মাত্রই ওত পেতে থাকা বাইক আরোহী অপরাধীরা তার মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। খেমকাকে তাৎক্ষণিকভাবে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে নিয়ে যান, যেখানে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হত্যার খবর পেয়ে গভীর রাতে এসএসপি, সিটি এসপি, সাংসদ পাপ্পু যাদব সহ অনেকে খেমকার বাসভবনে পৌঁছেছেন। ঘটনাস্থলে ফরেনসিক দলও তদন্ত করেছে। পুলিশ এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। গোপাল খেমকা পেট্রোল পাম্প, কারখানা এবং হাসপাতাল সহ অনেক ব্যবসা পরিচালনা করতেন। ২০১৮ সালে তার ছেলে গুঞ্জন খেমকাকেও অপরাধীরা হাজিপুর শিল্পাঞ্চলে গুলি করে হত্যা করেছিল। বর্তমানে এই সর্বশেষ ঘটনাটি আবারও পাটনায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছে। পুলিশ মামলার তদন্তে ব্যস্ত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *