১০০০ কিমি রেঞ্জ, ৪০ টন পেলোড ও ব্রহ্মোস মিসাইলের সুবিধা! ভারতের Tu-160M বোমারু বিমান চুক্তি, পাকিস্তানের বুকে কাঁপন

১০০০ কিমি রেঞ্জ, ৪০ টন পেলোড ও ব্রহ্মোস মিসাইলের সুবিধা! ভারতের Tu-160M বোমারু বিমান চুক্তি, পাকিস্তানের বুকে কাঁপন

সীমান্তে পাকিস্তান ও চিনের আগ্রাসী মনোভাবের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ভারত রাশিয়ার সঙ্গে সবচেয়ে বিপজ্জনক Tu-160M বোমারু বিমান নিয়ে একটি চুক্তি করেছিল। যদিও এই বিমানগুলির সরবরাহ বর্তমানে বিলম্বিত হচ্ছে। এই বোমারু বিমান ভারতীয় নৌবহরে যুক্ত হলে পাকিস্তান ও চিনের সীমান্তে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হবে, কারণ এই বোমারু বিমান এতটাই বিপজ্জনক যে এর সমকক্ষ কোনো বোমারু বিমান পাকিস্তান বা চিনের কাছে নেই।

ভারত রাশিয়ার সঙ্গে Tu-160M বোমারু বিমান ‘হোয়াইট সোয়ান’ লিজ নেওয়ার চুক্তি করেছিল। এর সঙ্গে ভারতীয় ব্রহ্মোস মিসাইল যুক্ত করারও একটি চুক্তি হয়েছিল। তবে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধের কারণে এর সরবরাহে ব্যাপক বিলম্ব হচ্ছে। এই বোমারু বিমান ভারতীয় বিমানবাহিনীতে যোগ দিলে তা ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষমতাকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

গতি ও পাল্লা
যদি এর গতির কথা বলি, তাহলে Tu-160M-এর গতি ২,২০০ কিমি/ঘণ্টা। এর পাল্লা হলো ১২,০০০ কিলোমিটার, তাও কোনো রিফুয়েলিং ছাড়াই। এর পেলোড ক্ষমতা ৪০ টন। এই বিমানটি রুশ সেনাবাহিনী ব্যবহার করে। এই চুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল যে, এতে ভারতের ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইলকে Tu-160M-এর সঙ্গে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল। এর ফলে ভারতের কাছে বিশ্বের দ্রুততম ক্রুজ মিসাইলকে একটি অত্যাধুনিক সুপারসনিক বিমান থেকে উৎক্ষেপণের এক অনন্য ক্ষমতা চলে আসত। এই চুক্তি প্রযুক্তি স্থানান্তর, মিশন প্রস্তুতি এবং কৌশলগত আত্মনির্ভরতাকেও শক্তিশালী করত, যা প্রধানমন্ত্রী মোদীর আত্মনির্ভর ভারত প্রতিরক্ষা কৌশলের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল।

চুক্তি আটকে যাওয়ার কারণ কী?
রাশিয়াকে এখন তাদের নিজস্ব কৌশলগত ক্ষমতা বজায় রাখার জন্য Tu-160M বিমানের প্রয়োজন। কাজান এভিয়েশন প্ল্যান্ট, যেখানে এই বিমানগুলি নির্মিত হয়, সেটি এখন যুদ্ধকালীন চাহিদা এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রবল চাপের মধ্যে রয়েছে। হাই-টেক উপাদান এবং ইলেকট্রনিক্সের অভাব উৎপাদনকে ধীর করে দিয়েছে। সম্প্রতি রাশিয়ার এয়ারবেসে ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলা দেখিয়েছে যে, Tu-160M এখন রুশ জাতীয় নিরাপত্তার মূল সম্পদ হয়ে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে, ভারতের মতো ঘনিষ্ঠ অংশীদারকেও এই বিমান দিতে রাশিয়া এখন দ্বিধা করছে।

আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে ভারসাম্য
ভারতের বর্তমান বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি কৌশলগত ভারসাম্যের উপর নির্ভর করে। ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কয়েক দশকের পুরোনো প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বজায় রেখেছে, তবে একই সাথে এটি আমেরিকা, ফ্রান্স, ইসরায়েল এবং জাপানের মতো দেশগুলির সঙ্গেও গভীরভাবে জড়িত। এমন পরিস্থিতিতে, রাশিয়া থেকে Tu-160M-এর মতো উচ্চ-প্রোফাইল অস্ত্র নেওয়া পশ্চিমা দেশগুলির সঙ্গে কূটনৈতিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে, বিশেষ করে এমন সময়ে যখন রাশিয়া পশ্চিমা চাপ এবং নিষেধাজ্ঞার সাথে লড়াই করছে।

ভারতীয় বিমানবাহিনীর কি দীর্ঘ-পাল্লার বোমারু বিমানের প্রয়োজন?
ভারতীয় বিমানবাহিনী বর্তমানে মূলত যুদ্ধবিমান (যেমন Su-30MKI, রাফায়েল) এর উপর নির্ভরশীল যা মাঝারি-পাল্লার স্ট্রাইক মিশনের জন্য উপযুক্ত। কিন্তু, দীর্ঘ দূরত্বে বিমান হামলার ক্ষমতার অভাব কৌশলগত ভারসাম্যে একটি দুর্বলতা। Tu-160M-এর মতো বিমান দিয়ে অন্য দেশের গভীরে আঘাত করা যেতে পারে, তাও সীমান্ত অতিক্রম না করেই। আমেরিকা, রাশিয়া এবং চিনের মতো দেশগুলির কাছে ইতিমধ্যেই দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত বোমারু ফ্লিট রয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *