চলন্ত ট্রেন হঠাৎ স্তব্ধ! গার্ডের কামরায় যা দেখা গেল, তা দেখে যাত্রীদের চক্ষু চড়কগাছ

দিল্লি থেকে সাহারানপুরগামী একটি যাত্রীবাহী ট্রেন আচমকাই উত্তরপ্রদেশের বাগপথের আলাওয়ালপুর হল্টে থেমে যায়। প্রথমে যাত্রীরা ভেবেছিলেন, হয়তো অন্য কোনো ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু যখন দীর্ঘক্ষণ ট্রেন দাঁড়িয়ে রইল এবং কোনো ট্রেন এল না, তখন কিছু যাত্রী গার্ডের কামরার দিকে নজর দেন। কামরার ভেতরে উঁকি মারতেই যে দৃশ্য সামনে এল, তা দেখে সবাই হতবাক।
গার্ড নেশায় বুঁদ হয়ে বেহুঁশ অবস্থায় পড়ে ছিলেন, যার কারণে ট্রেনটি প্রায় ৪০ মিনিট ধরে সেখানেই আটকে ছিল। এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর রেলওয়ে প্রশাসন তদন্ত শুরু করেছে। জানা গেছে, বাগপথ জেলায় এই ঘটনা ঘটেছে, যেখানে একজন যাত্রীবাহী ট্রেনকে ৪০ মিনিট ধরে আটকে থাকতে হয়েছিল শুধুমাত্র ট্রেনের গার্ড নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তার কামরায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকার কারণে।
সোমবার দিল্লি থেকে সাহারানপুরগামী নিয়মিত প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি সময়মতো যাত্রা শুরু করেছিল। ট্রেনটি তার ছোট-বড় সব স্টেশনে থামতে থামতে বাগপথের কাছে আলাওয়ালপুর হল্টে এসে হঠাৎ থেমে যায়। সময় যত গড়াতে থাকে, এবং দুদিক থেকে কোনো ট্রেন না আসায় যাত্রীদের সন্দেহ হয়। বেশ কিছুক্ষণ ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকার পর কিছু যাত্রী নেমে এসে কী হয়েছে তা দেখতে শুরু করেন। তখনই কারো নজর গার্ডের কামরার দিকে যায়। দীর্ঘক্ষণ কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে কিছু যাত্রী গার্ডের কামরায় উঁকি মারার চেষ্টা করেন। প্রথমে দরজার পাশ থেকে ডাকাডাকি করা হয়, কিন্তু কোনো জবাব আসে না। এরপর কিছু লোক উপরে উঠে ভেতরে ঢোকে—সেখানে যা দেখে, তাতে সবাই স্তম্ভিত হয়ে যায়। গার্ড নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মেঝেতে লুটিয়ে পড়েছিলেন। তার পাশেই মদের বোতলও দেখা যায়। অবস্থা এমন ছিল যে, তিনি কোনো প্রশ্নের জবাব দেওয়ার মতো অবস্থায় ছিলেন না।
ঘটনার সাক্ষী যাত্রীরা পুরো দৃশ্য মোবাইলে রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। ভিডিওতে গার্ডের অবস্থা এবং মদের বোতল স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রেলওয়ে কর্মকর্তাদের টনক নড়ে। রেলওয়ে কর্মীর পরিচয় নিশ্চিত করেছে এবং তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। বিভাগ জানিয়েছে যে, দোষীর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই দায়িত্বজ্ঞানহীনতার খেসারত যাত্রীদের ভোগ করতে হয়েছে। ট্রেনটি প্রায় ৪০ মিনিট ধরে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিল, যা মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়। বেশিরভাগ যাত্রীই প্রতিদিনের যাত্রী ছিলেন, যাদের সময়ের প্রতি কঠোর বাধ্যবাধকতা থাকে। রেলওয়ে প্রশাসন জানিয়েছে যে, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং দ্রুত রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে। পাশাপাশি, সব জোন এবং ডিভিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে এমন ঘটনার বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং মদ্যপান-এর মতো গুরুতর বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়।