সকালে ঘুম ভাঙতেই শরীর দিচ্ছে এই ৫ সঙ্কেত? আপনার সুগার লেভেল বেড়েছে কি না, জেনে নিন আর নিয়ন্ত্রণ করুন!

আপনিও কি সকালে ঘুম থেকে উঠেই তৃষ্ণায় অস্থির হয়ে পড়েন বা চোখে ঝাপসা দেখেন? বারবার টয়লেটে যাওয়া বা বিনা কারণে খিটখিটে মেজাজ কি আপনাকে সারাদিন ক্লান্ত করে তোলে? যদি হ্যাঁ, তাহলে এই লক্ষণগুলি আপনার শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত হতে পারে। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা ধীরে ধীরে শরীরের অনেক অঙ্গের ক্ষতি করে এবং যদি সময়মতো এটি শনাক্ত না করা হয়, তবে এটি কিডনি, হার্ট, চোখ এবং স্নায়ুতন্ত্রকেও প্রভাবিত করতে পারে। তাই এর প্রাথমিক লক্ষণগুলি সময়মতো চেনা জরুরি। চিকিৎসকদের মতে, সকালে দেখা দেওয়া কিছু লক্ষণ আপনার শরীরে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। যদি এই লক্ষণগুলি উপেক্ষা করা হয়, তবে ভবিষ্যতে এটি গুরুতর রূপ নিতে পারে।
সকালে দেখা দেওয়া ৫টি প্রধান লক্ষণ
১. সকালে ঘুম থেকে উঠেই মুখ শুকিয়ে যাওয়া এবং বেশি তৃষ্ণা লাগা: যদি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই আপনার মুখ শুষ্ক মনে হয় বা বারবার জল পান করার প্রয়োজন হয়, তবে এটি উচ্চ রক্তে শর্করার লক্ষণ হতে পারে।
২. চোখে ঝাপসা বা ভারী লাগা: সকালে চোখ খুলতেই যদি সবকিছু ঝাপসা মনে হয় বা চোখে ভারীपन অনুভব হয়, তবে এটিও একটি গুরুতর লক্ষণ হতে পারে।
৩. সকাল থেকেই ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করা: যদি পর্যাপ্ত ঘুম সত্ত্বেও সকালে ঘুম থেকে উঠেই ক্লান্ত অনুভব করেন বা সারা শরীরে দুর্বলতা থাকে, তবে এটি ইঙ্গিত দেয় যে আপনার শরীর শর্করাকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সক্ষম হচ্ছে না।
৪. বারবার প্রস্রাব আসা: সকালে ঘুম থেকে ওঠার আগেই যদি টয়লেটে যাওয়ার তাড়া থাকে বা সকালে উঠেই বারবার প্রস্রাব আসে, তবে এটিও শর্করার মাত্রা বৃদ্ধির লক্ষণ হতে পারে।
৫. মুড সুইং এবং খিটখিটে মেজাজ: সকালে ঘুম থেকে উঠেই যদি হঠাৎ রাগ হয়, বিষণ্ণতা অনুভব হয় বা কোনো কারণ ছাড়াই খিটখিটে হয়ে যান, তবে এটি আপনার মস্তিষ্কে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধির প্রভাবের ফল হতে পারে।
রক্তে শর্করার মাত্রা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন? ১. খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন: প্রাকৃতিক, কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবার যেমন ওটস, ব্রাউন রাইস, সবুজ শাকসবজি এবং ফল খান। চিনি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে দূরে থাকুন। ২. নিয়মিত ব্যায়াম করুন: প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন, যোগব্যায়াম বা হালকা ব্যায়াম করুন। এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ভারসাম্যপূর্ণ রাখে। ৩. মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন: মানসিক চাপ রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়াতে পারে। মেডিটেশন, ধ্যান এবং গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের কৌশল দিয়ে মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখুন। ৪. সময়মতো রক্তে শর্করার পরীক্ষা করান: যদি আপনার উপরে উল্লিখিত কোনো লক্ষণ দেখা যায়, তবে অবিলম্বে ডাক্তারের সাথে দেখা করুন এবং রক্তে শর্করার পরীক্ষা করান। ৫. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন: প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি, কারণ ঘুমের অভাবে ইনসুলিনের উপর প্রভাব পড়ে এবং শর্করার মাত্রা বিগড়ে যেতে পারে।