এবার আমেরিকার ‘দাদাগিরি’র অবসান? ব্রিকস কেন ট্রাম্পের চোখে ‘আমেরিকাবিরোধী’?

এবার আমেরিকার ‘দাদাগিরি’র অবসান? ব্রিকস কেন ট্রাম্পের চোখে ‘আমেরিকাবিরোধী’?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বিস্ফোরক পোস্ট করে ব্রিকস দেশগুলোর প্রতি কড়া বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “যেসব দেশ ব্রিকস জোটের সঙ্গে মিলে আমেরিকাবিরোধী নীতি সমর্থন করবে, তাদের ওপর আমরা ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করব। আমাদের এই নীতিতে কারো জন্য কোনো ছাড় থাকবে না।” ট্রাম্পের এই বার্তা কেবল একটি ঘোষণা নয়, বরং এটি একটি স্পষ্ট হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, হঠাৎ করে কেন ট্রাম্পের চোখে দশটি দেশের এই জোট ‘আমেরিকাবিরোধী’ মনে হচ্ছে? এর উত্তর খুঁজতে হলে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক ব্রিকস বৈঠকের দিকে নজর দিতে হবে।

ব্রাজিলে ব্রিকস দেশগুলো পশ্চিমা বিশ্বের অর্থনৈতিক কাঠামোর উপর নির্ভরতা কমানোর উপর জোর দিয়েছে। তারা নিজেদের মধ্যে স্থানীয় মুদ্রায় লেনদেন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং ‘নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক’ নামে একটি নতুন আর্থিক প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়েও একমত হয়েছে। এই পদক্ষেপগুলো সরাসরি ‘আমেরিকাবিরোধী’ না হলেও, এর মূল উদ্দেশ্য হলো ‘ডি-ডলারাইজেশন’, অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলারের ব্যবহার কমানো। যদি ব্রিকস দেশগুলো, যারা বিশ্বের প্রায় ৪০% জনসংখ্যার প্রতিনিধিত্ব করে, ডলারের পরিবর্তে নিজেদের মুদ্রায় লেনদেন শুরু করে, তাহলে ডলারের চাহিদা কমে যাবে এবং এর ফলে মার্কিন অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে শুধু ডলারই দুর্বল হবে না, বরং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমেরিকার প্রভাব খাটানোর ক্ষমতাও কমে যাবে। এছাড়াও, ব্রিকসের ‘নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক’ সফল হলে বিশ্বব্যাংক বা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের মতো পশ্চিমা নিয়ন্ত্রিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর ব্রিকস দেশগুলোর নির্ভরতা হ্রাস পাবে, যা ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্বেগের মূল কারণ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *