ট্রাম্পের ‘আমেরিকা-বিরোধী’ অভিযোগের পাল্টা জবাব ব্রিকস নেতাদের, লুলা বললেন ‘বিশ্বের কোনো সম্রাটের প্রয়োজন নেই’

ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। ব্রিকস দেশগুলো সর্বসম্মতভাবে এই ট্যারিফ নীতির নিন্দা জানিয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রিকস দেশগুলোর বিরুদ্ধে ‘আমেরিকা-বিরোধী’ হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তবে ব্রিকস দেশগুলোর নেতারা ট্রাম্পের এই অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। শুধু তাই নয়, ট্রাম্পের এই অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি লুলা দা সিলভা বলেছেন, “বিশ্বের এখন কোনো সম্রাটের প্রয়োজন নেই।”
লুলা দা সিলভার এই মন্তব্য ব্রিকস সম্মেলনের সমাপ্তির সময় এসেছে, যখন ট্রাম্প রবিবার রাতে হুমকি দিয়েছিলেন যে, যেসব দেশ আমেরিকার বিরুদ্ধে ব্রিকসকে সমর্থন করবে, তাদের ওপর নতুন বাণিজ্য শুল্ক (ট্যারিফ) আরোপ করা হবে।
“এমন নেতৃত্ব চাই না যারা নিজেদের সম্রাট মনে করে” – লুলা
রাষ্ট্রপতি লুলা আরও বলেন, “বিশ্ব বদলে গেছে। এখন আমরা এমন নেতৃত্ব চাই না যারা নিজেদের সম্রাট মনে করে। ব্রিকস দেশগুলো কেবল একটি নতুন অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে চায়। সম্ভবত এই কারণেই কিছু দেশের আমাদের প্রতি সমস্যা হচ্ছে।” লুলা আরও জোর দিয়ে বলেন যে, বৈশ্বিক বাণিজ্যকে কেবল মার্কিন ডলারের উপর নির্ভরশীল থাকা উচিত নয়। তিনি বলেন, “আমাদের এমন একটি পথ খুঁজতে হবে, যাতে ডলার ছাড়াই বাণিজ্যিক লেনদেন সম্ভব হয়। তবে এই কাজ দায়িত্বশীলতা ও সতর্কতার সাথে করতে হবে।”
অন্যান্য নেতাদের প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের এই সতর্কবার্তায় অন্যান্য দেশের নেতারাও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি সিরিল রামাফোসা বলেন যে, ব্রিকস কোনো বৈশ্বিক শক্তির সাথে প্রতিযোগিতা করছে না এবং আমেরিকার সাথে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে তারা আশাবাদী। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেন যে, ট্যারিফকে চাপ সৃষ্টির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়। তিনি বলেন যে, ব্রিকস ‘উইন-উইন’ সহযোগিতাকে উৎসাহিত করে, কোনো দেশের বিরুদ্ধে নয়। অন্যদিকে, রাশিয়ার ক্রেমলিন মুখপাত্র বলেছেন যে, রাশিয়া এবং ব্রিকসের সহযোগিতা একটি সাধারণ চিন্তাভাবনার উপর ভিত্তি করে তৈরি এবং এটি কখনোই কোনো তৃতীয় দেশের বিরুদ্ধে হবে না।