ভারতীয় বিমানবাহিনীর রাফাল ধ্বংসের কারণ পাক নয়, ফরাসি বিমানবাহিনীর প্রধানের বিস্ফোরক দাবি

ভারতীয় বিমানবাহিনীর (IAF) রাফাল যুদ্ধবিমানগুলো আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে, কারণ ২০২৫ সালের মে মাসে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের সময় পাকিস্তান তিনটি রাফাল বিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছিল। ভারত এবং প্রস্তুতকারক দাসল্ট এভিয়েশন (Dassault Aviation) অবশ্য কোনো ক্ষতির কথা স্বীকার করেনি। এরই মধ্যে ফরাসি বিমানবাহিনীর প্রধান একটি বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস করেছেন।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, জেনারেল বেলাঞ্জার (General Bélanger) জানিয়েছেন যে, তাদের কাছে তিনটি ভারতীয় বিমান ধ্বংসের প্রমাণ আছে, যার মধ্যে একটি রাফাল, একটি মিরাজ ২০০০ (Mirage 2000) এবং একটি রুশ নির্মিত সুখোই Su-30MKI অন্তর্ভুক্ত। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, রাফালের ক্ষতি যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানের দ্বারা হয়নি। বরং, রাফাল বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ ছিল প্রযুক্তিগত ত্রুটি। বেলাঞ্জার বলেছেন, এই প্রথম রাফাল যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হলো, যদিও এটি আটটি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে।
পাকিস্তানের দাবি মিথ্যা এবং চীনের গুজব ছড়ানো
পাকিস্তান দাবি করেছিল যে, তারা তাদের J-10C যুদ্ধবিমান থেকে PL-15E এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল ব্যবহার করে ভারতীয় রাফাল বিমানগুলো ধ্বংস করেছে। যদিও, এই দাবিগুলোর সমর্থনে পাকিস্তান এখনও পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। অন্যদিকে, রাফাল প্রস্তুতকারক সংস্থা দাসল্ট এভিয়েশনের সিইও এরিক ট্র্যাপিয়ারও (Eric Trappier) পাকিস্তানের দাবিগুলো প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন যে, ‘অপারেশন সিন্দূর’-এর সময় কোনো রাফাল যুদ্ধবিমান যুদ্ধে বিধ্বস্ত হয়নি। তিনি একমাত্র একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন, যা ১২,০০০ মিটার উচ্চতায় একটি প্রশিক্ষণ মিশনের সময় ঘটেছিল, যেখানে কোনো শত্রু জড়িত ছিল না বা রাডার কার্যকলাপও ছিল না।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা সচিব আর.কে. সিংও ৭ই জুলাই একটি সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করেছেন যে, ‘অপারেশন সিন্দূর’-এর সময় ভারত রাফাল বিমান হারিয়েছে, এমনটা বলা ভুল। তিনি পাকিস্তানের দাবিগুলো প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন যে, চার দিনের এই সংঘাতে ভারত-এর তুলনায় পাকিস্তানের অনেক বেশি ক্ষতি হয়েছে এবং ১০০-এর বেশি সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। এরই মধ্যে, ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দাবি করেছে যে পাকিস্তান এবং তার সহযোগী চীন রাফালের সুনাম নষ্ট করার জন্য একটি সুপরিকল্পিত অপপ্রচার অভিযান চালিয়েছে।
ফরাসি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মতে, চীন তাদের দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে রাফালের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং অন্যান্য দেশ, বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়াকে চীনা নির্মিত যুদ্ধবিমান বেছে নিতে প্ররোচিত করার চেষ্টা করেছে। এই অভিযানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ১,০০০-এর বেশি নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়েছে, যা চীনা সামরিক প্রযুক্তির শ্রেষ্ঠত্ব প্রচার করছিল।