‘শিশুদের নিরাপত্তা পারিবারিক নয়, সামাজিক দায়িত্ব’, হাইকোর্টের গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য, কী এই মামলা?

‘শিশুদের নিরাপত্তা পারিবারিক নয়, সামাজিক দায়িত্ব’,  হাইকোর্টের গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য, কী এই মামলা?

দিল্লি হাইকোর্ট ৭ বছর বয়সী একটি শিশুর সাথে কথিত নিষ্ঠুরতার অভিযোগে দায়ের করা এফআইআর (FIR) বাতিল করতে অস্বীকার করেছে। দিল্লি হাইকোর্ট বলেছে যে, শিশুদের বিরুদ্ধে এই ধরনের অপরাধ সমাজের সম্মিলিত বিবেককে প্রভাবিত করে এবং শুধুমাত্র ব্যক্তিগত বিরোধ হিসাবে এগুলি বাতিল করা যায় না।

পুরো ঘটনাটি কী?
দিল্লি হাইকোর্টে দায়ের করা আবেদন অনুযায়ী, পুরো ঘটনাটি ২০২৩ সালের জুন মাসের। যখন একজন মহিলা অভিযোগ করেছিলেন যে, তার প্রতিবেশী অমিত এবং তার স্ত্রী তার ছেলেকে মারধর করেছে এবং এমনকি তাকে বৈদ্যুতিক শকও দিয়েছে। এই মামলায় দিল্লির গোবিন্দপুরী থানায় বিভিন্ন ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল।

এই মামলায় পরে ভুক্তভোগী শিশুর মা এবং অভিযুক্ত পক্ষের মধ্যে একটি আপস-মীমাংসা হয়েছিল। এই আপস-মীমাংসাকে প্রধান ভিত্তি বানিয়ে অভিযুক্ত পক্ষ দিল্লি হাইকোর্টে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআর বাতিল করার জন্য একটি আবেদন দায়ের করেছিল। দিল্লি হাইকোর্টে মামলার শুনানির সময় ভুক্তভোগীর মা আদালতকে জানান যে, তারা কোনো চাপ বা জোর-জুলুম ছাড়াই এই আপস-মীমাংসা করেছেন।

দিল্লি হাইকোর্টের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ
বিচারপতি স্বর্ণ কান্তা শর্মা মামলাটি শুনানি করার সময় তার আদেশে স্পষ্ট করে বলেছেন যে, এই ধরনের গুরুতর অভিযোগ কেবল পারস্পরিক আপস-মীমাংসার ভিত্তিতে খারিজ করা যায় না।

হাইকোর্ট বলেছে যে, এই ধরনের কাজ শুধুমাত্র ভুক্তভোগীকেই প্রভাবিত করে না, বরং সমাজে শিশুদের নিরাপত্তা এবং জনস্বার্থ সম্পর্কিত বড় প্রশ্ন উত্থাপন করে। একই সাথে, আদালত এও বলেছে যে, এই পর্যায়ে এফআইআর বাতিল করা ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে দুর্বল করবে এবং একটি গুরুতর উদাহরণ তৈরি করবে।

দিল্লি হাইকোর্ট শিশুর বক্তব্যকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেছে
দিল্লি হাইকোর্ট ভুক্তভোগী শিশুর বক্তব্যকেও এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেছে, যেখানে সে ঘটনার পুরো বিবরণ দিয়েছিল। হাইকোর্ট বলেছে যে, যখন শিশুটি মাত্র ৭ বছর বয়সী ছিল, তখন তার উপর এই ধরনের সহিংসতা এবং মনস্তাত্ত্বিক আঘাতকে হালকাভাবে নেওয়া যায় না, এমনকি শক দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত বস্তুটি যদি টর্চও হয়ে থাকে।

আদালত বলেছে যে, অভিযোগের গুরুত্ব, ভুক্তভোগীর বয়স এবং আইনকে তার স্বাভাবিক পথে চলতে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে এফআইআর বাতিল করার দাবি গ্রহণ করা যায় না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *