মেয়াদোত্তীর্ণের পর এই ঔষধগুলো ডাস্টবিনে নয়, টয়লেটে ফেলে দিন! কারণ জেনে নিন

সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (CDSCO) একটি নির্দেশিকা জারি করেছে। এতে এমন কিছু ঔষধের কথা বলা হয়েছে, যা মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার বা ব্যবহার না হওয়ার পর আবর্জনার পাত্রে ফেলা উচিত নয়। বরং সেগুলো টয়লেটে ফ্লাশ করা উচিত। এই বিষয়ে CDSCO একটি নির্দেশিকা জারি করেছে, যেখানে ১৭টি ঔষধের উল্লেখ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত নেশাযুক্ত এবং যার অপব্যবহার গুরুতর ক্ষতি করতে পারে।
CDSCO যে ঔষধগুলো ফ্লাশ করার নির্দেশিকা জারি করেছে, তার বেশিরভাগই পেইনকিলার এবং অ্যান্টি-অ্যাংজাইটি ঔষধ, যা নারকোটিক ক্যাটাগরিতে পড়ে। এই ঔষধগুলো যদি ভুল ব্যক্তির হাতে পড়ে বা ভুলবশত সেবন করা হয়, তাহলে তা প্রাণঘাতী হতে পারে। কিছু লোক এগুলোকে মাদক হিসেবেও ব্যবহার করতে পারে। এই ঔষধগুলো ফ্লাশ করা নিরাপদ বলে মনে করা হয়েছে, কারণ সেগুলো পরিবেশের গুরুতর ক্ষতি করে না। এই ঔষধগুলো জলকে দূষিত করে না এবং পরিবেশের জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করে না, যদি সেগুলোকে সঠিক উপায়ে নষ্ট করা হয়।
যে ১৭টি ঔষধের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, সেগুলো হলো:
Fentanyl
Tramadol
Morphine Sulphate
Buprenorphine
Methylphenidate
Tapentadol
Oxycodone
Diazepam
Hydrocodone
Methadone
Meperidine
Oxymorphone
Demerol
Dilaudid
Exalgo
Nucynta
Ritalin
ঘরে রাখা সব মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ কি টয়লেটে ফেলা যাবে?
এ বিষয়ে আরএমএল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ড. পুনীত কুমার গুপ্ত জানান, অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ জলে মিশে তা দূষিত করতে পারে। সাধারণ ঔষধ যেমন, বিপি (BP), সুগার বা থাইরয়েডের ঔষধ নদী, নালা এবং মাটিতে মিশে জলকে দূষিত করে। ড. কুমার বলেন যে, এই ধরনের ঔষধের জন্য সরকার ড্রাগ টেক-ব্যাক প্রোগ্রাম (Drug Take-Back Programme) চালু করেছে। এতে হাসপাতাল থেকে শুরু করে বাড়ির আবর্জনার পাত্র পর্যন্ত থেকে নষ্ট বা অব্যবহৃত ঔষধ সংগ্রহ করে নিরাপদে নষ্ট করা হয়।
এই ১৭টি ঔষধ টয়লেটে ফেলা কেন জরুরি?
ড. কুমার বলেন, ঘরে পড়ে থাকা নেশাযুক্ত বা পেইনকিলার ঔষধ শিশুদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। যদি এগুলো টয়লেটে না ফেলে আবর্জনায় ফেলা হয় এবং কোনো প্রাণী ভুলবশত খেয়ে ফেলে, তাহলে তা প্রাণঘাতী হতে পারে। যদি ঘরেও কোনো ব্যক্তি ভুলবশত এগুলো খেয়ে ফেলে এবং তার সেগুলোর প্রয়োজন না হয়, তাহলে এই ঔষধগুলো তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটাতে পারে। তাই এই ঔষধগুলো সরাসরি টয়লেটে ফেলে দেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। অন্যান্য ঔষধগুলো কেবল সুসংগঠিত মেডিকেল ওয়েস্ট ডিসপোজাল সিস্টেমের মাধ্যমেই নষ্ট করা উচিত।
এতে কী লাভ হবে?
ড. পুনীত বলেন যে, CDSCO-এর এই নতুন নির্দেশিকা ঔষধের নিরাপদ নিষ্পত্তির দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি জরুরি যে, মানুষ ঔষধকে শুধু চিকিৎসার মাধ্যম হিসেবেই না দেখে, বরং সেগুলোর নিষ্পত্তির তথ্যও তাদের জানা উচিত। কারণ, যদি কোনো শিশু ভুলবশত ঔষধ খেয়ে ফেলে, তাহলে তার জীবনহানিও হতে পারে। তাই সঠিক তথ্য এবং সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করাই বিচক্ষণতা। মানুষকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যে, এই ঔষধগুলো নির্ধারিত সময় এবং ডোজ অনুযায়ীই গ্রহণ করুন। চেষ্টা করুন যেন এই ঔষধগুলো অব্যবহৃত না থাকে এবং বেশি পরিমাণে কখনোই নেবেন না। যদি কোনো কারণে ঔষধের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, তাহলে নিষ্পত্তির তথ্য অবশ্যই জেনে রাখুন।
ঔষধ কীভাবে নিষ্পত্তি করবেন?
ঔষধটি তার মূল প্যাকেজিং থেকে বের করে ফ্লাশ করুন।
যদি এই ঔষধগুলো ব্যবহার করছেন, তাহলে রোগির কাছেই রাখুন এবং শিশুদের নাগাল থেকে দূরে রাখুন।
উল্লেখিত ১৭টি ঔষধ কখনোই সাধারণ ডাস্টবিনে ফেলবেন না।
মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ অন্যদের দেবেন না।