ইরানের মতো কি রাশিয়ার বিরুদ্ধেও সরাসরি যুদ্ধে নামবে আমেরিকা? ট্রাম্পের ইঙ্গিত

ইরানের মতো কি রাশিয়ার বিরুদ্ধেও সরাসরি যুদ্ধে নামবে আমেরিকা? ট্রাম্পের ইঙ্গিত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ায় বিপর্যয়ের প্রস্তুতি নিয়েছেন। পুতিনের ওপর ক্ষিপ্ত ট্রাম্প ইউক্রেনকে আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র পাঠানো শুরু করেছেন। দুই নেতার মধ্যে আলোচনার পর আমেরিকার এই পদক্ষেপ পুতিনের প্রতি ট্রাম্পের ক্ষোভকে তুলে ধরছে।

ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্প পুতিনের ওপর এতটাই ক্ষিপ্ত যে, প্রয়োজনে তিনি ইরানের মতো রাশিয়ার বিরুদ্ধেও সরাসরি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন।

ট্রাম্প সম্প্রতি ইউক্রেনকে অস্ত্র দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল যে, ট্রাম্প অস্ত্রের মজুদ নিয়ে চিন্তিত, যদিও এটি সম্পূর্ণ সত্য নয়। Axios-এ প্রকাশিত একটি রিপোর্টে ট্রাম্পের আস্থাভাজনদের উদ্ধৃতি দিয়ে লেখা হয়েছে যে, ট্রাম্প মনে করেন, এই যুদ্ধ তার নয়। “যদি আমরা ইউক্রেনকে আবার অস্ত্র পাঠানো শুরু করি, তবে এটি তাদের যুদ্ধ হয়ে যাবে।”

তাহলে কি যুদ্ধে নামবে আমেরিকা?
আমেরিকা সম্প্রতি ইরান ও ইসরায়েলের যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল এবং ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে বাঙ্কার বাস্টার বোমা ফেলেছিল। পরে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতিও কার্যকর করেছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ইরানের ওপর বোমা হামলা করার সময় সামরিক শক্তি ব্যবহার করতে ট্রাম্পের দ্বিধা ছিল, তবে তিনি তা কাটিয়ে উঠেছিলেন। এখন ট্রাম্পের উপদেষ্টারা মনে করছেন যে, একইভাবে তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে পারেন।

ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় অস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার সহযোগীদের সাথে কয়েক দফা আলোচনার পর ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় অস্ত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ইউক্রেনকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ইন্টারসেপ্টর সহ কিছু অস্ত্রের চালান স্থগিত করেছিল। এখন প্রয়োজনীয় অস্ত্রের চালান ইউক্রেনের পথে রয়েছে। এর মধ্যে ট্রাম্প বিকল্প সমাধানও খুঁজছেন, যার মধ্যে জার্মানির উপর তাদের প্যাট্রিয়ট ব্যাটারি পাঠানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করাও অন্তর্ভুক্ত।

ইউক্রেনকে নিজের রক্ষা করতে হবে
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাথে সোমবার আলোচনার পর ট্রাম্প বলেছেন যে, “আমাদের ইউক্রেনের পক্ষ থেকে অস্ত্র পাঠাতে হবে। এগুলো হবে প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র, তাদের নিজেদের রক্ষা করতে হবে।” এর পরপরই পেন্টাগন জানিয়েছে যে, ইউক্রেনকে অতিরিক্ত প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র পাঠানো হবে, যাতে ইউক্রেনীয়রা নিজেদের রক্ষা করতে পারে।

পুতিনের ওপর ক্ষিপ্ত ট্রাম্প
ইউক্রেনকে অস্ত্র পাঠানোর সিদ্ধান্তের পেছনে ট্রাম্পের রাগকেই কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি ট্রাম্প পুতিনের সাথে কথা বলেছিলেন, যেখানে পুতিন আলোচনায় রাজি হওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন, তবে এও বলেছিলেন যে, রাশিয়া তার লক্ষ্য অর্জন না করা পর্যন্ত থামবে না। এর পরের দিনই রাশিয়া কিয়েভে ভয়াবহ হামলা চালায়। এতে ট্রাম্প ক্ষুব্ধ। অন্যদিকে, জেলেনস্কির সাথেও ট্রাম্পের ফোনে কথা হয়েছে, যাকে দুই নেতার মধ্যে এ পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো ফোন কল বলা হচ্ছে। এই কথোপকথনেই ট্রাম্প জেলেনস্কিকে বলেছেন যে, তিনি ইউক্রেনের বিমান সুরক্ষায় সাহায্য করতে চান, আপাতত আমেরিকা তাৎক্ষণিক ১০টি প্যাট্রিয়ট ইন্টারসেপ্টর পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *