একদিকে ফের আক্রমণের প্রস্তুতিতে ইজরায়েল, অন্যদিকে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন সরিয়ে নিয়েছে ভূগর্ভে

গত মাসে ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাত এবং যুদ্ধবিরতির পরেও ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা শেষ হয়নি। এখন আবারও যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। অ্যাক্সিওস (Axios) এর একটি খবর অনুযায়ী, যদি ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরায় শুরু করে, তবে ইজরায়েল আবারও হামলা করতে পারে। আর এবার আমেরিকার সবুজ সংকেতও মিলতে পারে।
এরই মধ্যে ইরান তাদের প্রতিক্রিয়া স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তারা সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং এবার তাদের অস্ত্রশস্ত্র ভূগর্ভে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ইরানের শীর্ষ সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল ইয়াহিয়া রহিম সফভি ইজরায়েল ও আমেরিকাকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং এবার ইরান এখনও তাদের সম্পূর্ণ সামরিক শক্তি ব্যবহার করেনি।
ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ধ্বংস করা আসাম্ভব
রহিম সফভি দাবি করেছেন যে, ইরান এ পর্যন্ত হাজার হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন তৈরি করেছে এবং সেগুলোকে এমন স্থানে রাখা হয়েছে যেখানে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত। তিনি বলেন যে, ক্ষেপণাস্ত্র এবং পারমাণবিক শক্তি খাতে ইরানের অগ্রগতি সম্পূর্ণ স্বাদেশী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে হয়েছে, যাকে ধ্বংস করা যাবে না।
ইজরায়েল ও আমেরিকার উপর তীব্র আক্রমণ
সফভি ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে “দুষ্ট ও অপরাধী” বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে, তিনি তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণের জন্য গাজায় ৬০,০০০ মানুষ এবং ইরানে প্রায় ১,০০০ মানুষকে হত্যা করিয়েছেন। তিনি বলেন যে, নেতানিয়াহুর উদ্দেশ্য ছিল ইরানি শাসনকে উৎখাত করা, দেশকে বিভক্ত করা এবং জনগণের মধ্যে অস্থিরতা ছড়ানো, কিন্তু এই সমস্ত ক্ষেত্রে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।
“আমরাও তাদের ক্ষতি করেছি”
গত ১৩ই জুন ইজরায়েল কর্তৃক ইরানের উপর আকস্মিক হামলার পর ইরান পাল্টা আক্রমণ করে পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকান সামরিক ঘাঁটি এবং অধিকৃত ফিলিস্তিনি এলাকায় কৌশলগত ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানায়। ইরান দাবি করেছে যে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৮০টিরও বেশি ওয়ারহেড সহ শত শত ক্ষেপণাস্ত্র অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা ৪০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ছিল। ২৪শে জুন, এই পাল্টা হামলার পর আমেরিকা এবং ইজরায়েলকে যুদ্ধ বন্ধ করতে হয়েছিল।
রহিম সফভি সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির প্রশংসা করে বলেছেন যে, ইজরায়েলি হামলায় নিহত শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের স্থানে তিনি ২৪ ঘন্টার মধ্যেই নতুন উত্তরসূরি নিয়োগ করেছেন। এর ফলে ইরানি সামরিক কাঠামোতে কোনো বিশৃঙ্খলা দেখা যায়নি।
ফিলিস্তিন নীতি নিয়ে ইজরায়েলকে কোণঠাসা করেছে
ইরানি জেনারেল ইজরায়েলের ফিলিস্তিন নীতিকে ব্যর্থ আখ্যা দিয়ে বলেছেন যে, ২১ মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধ সত্ত্বেও হামাস টিকে আছে কিন্তু ইজরায়েলি সেনারা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে