মেয়েদের ধর্ম পরিবর্তনকারী ছাঙ্গুর বাবার কোঠিতে চলল বুলডোজার, কোটি টাকার সম্পত্তি মাটিতে মিশে গেল

মেয়েদের ধর্ম পরিবর্তনকারী ছাঙ্গুর বাবার কোঠিতে চলল বুলডোজার, কোটি টাকার সম্পত্তি মাটিতে মিশে গেল

উত্তর প্রদেশের বলরামপুর জেলায় মঙ্গলবার সকালে সরকারি বুলডোজারের একটি অভিযান চালানো হয়েছে। উত্তর প্রদেশ সরকার এই বুলডোজার অভিযান চালিয়েছে মেয়েদের ভুল বুঝিয়ে ধর্মান্তরিত করার অভিযুক্ত জামালউদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুর বাবার বলরামপুরের কোঠিতে।

প্রশাসনের এই অভিযানের সময় ঘটনাস্থলে প্রচুর পুলিশ বাহিনী এবং আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন। জানা যাচ্ছে যে, ছাঙ্গুর বাবা সরকারি জমিতে অবৈধভাবে এই কোঠিটি বানিয়েছিলেন এবং এখান থেকেই তার কথিত ধর্মান্তরণ চক্র পরিচালনা করতেন।

৩ কোটি টাকার কোঠিতে চলল বুলডোজার
এই অভিযানটি বলরামপুরের কোতোয়ালি উতরৌলা এলাকার মধপুর গ্রামে চালানো হয়েছে, যেখানে ছাঙ্গুর বাবার প্রায় ৩ কোটি টাকা মূল্যের কোঠিটি নির্মিত ছিল। এই কোঠিটি প্রায় তিন বিঘা জমির উপর তৈরি হয়েছিল, যা নীতু ওরফে নাসরিনের নামে নথিভুক্ত ছিল। প্রশাসনিক তদন্তে জানা গেছে যে, এই জমিটি গাটা সংখ্যা ৩৩৭/৩৭০ এর অধীনে আসে এবং এর উপর অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল। আধিকারিকরা আগেই উচ্ছেদের নোটিশ জারি করেছিলেন এবং সোমবার জমি পরিমাপের তারিখও নির্ধারিত হয়েছিল, কিন্তু ছাঙ্গুরের পরিবারের বিরোধিতার কারণে তা সম্পন্ন হতে পারেনি।

বিপুল সংখ্যক ফোর্সের উপস্থিতি
মঙ্গলবার সকালে এসডিএম, সিও এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিক তিনটি বুলডোজার নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং কড়া নিরাপত্তার মধ্যে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু করেন। কোঠির প্রধান গেটে তালা লাগানো ছিল, যা প্রশাসন ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে নির্মাণটি ভেঙে দেয়। এই সময় যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।

বহু জেলায় বিস্তৃত নেটওয়ার্ক
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এই কোঠিটি নীতু ওরফে নাসরিন এবং নবীন রোহরার নামে ছিল, কিন্তু এর পরিচালনা ছাঙ্গুর বাবাই করতেন। তিনি এখানেই থেকে তার সহযোগীদের সাথে কথিত ধর্মান্তর চক্র চালাচ্ছিলেন। তদন্তে এও সামনে এসেছে যে, এই চক্রের নেটওয়ার্ক বহু জেলায় বিস্তৃত ছিল।

নীতু ও ছাঙ্গুর বাবা
উল্লেখ্য, গত শনিবার উত্তর প্রদেশ এটিএস (ATS) ছাঙ্গুর বাবাকে নীতু ওরফে নাসরিনের সাথে লখনউয়ের একটি হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করেছিল। দুজনের বিরুদ্ধে গুরুতর ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে ধর্মান্তর, প্রতারণা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ছাঙ্গুর বাবার উপর আগে থেকেই ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল।

জিরো টলারেন্স নীতির অধীনে বড় পদক্ষেপ
প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির অধীনে নেওয়া একটি বড় পদক্ষেপ হিসাবে দেখা হচ্ছে। আধিকারিকরা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, ধর্মান্তরের মতো মামলায় জড়িত কোনো অভিযুক্তকে রেহাই দেওয়া হবে না, সে যতই প্রভাবশালী হোক না কেন।

বর্তমানে তদন্ত চলছে এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সম্পত্তিরও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশের সক্রিয়তা গ্রামে এবং আশেপাশের এলাকায় চাঞ্চল্য বাড়িয়ে দিয়েছে, তবে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *