সাইবার প্রতারণা: বিএসএফ জওয়ানদের ক্রেডিট কার্ড থেকে মোবাইল কেনা হয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপে এসেছিল ‘আয়ুষ্মান ভারত’-এর লিঙ্ক

কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনীর জওয়ানরাও সাইবার অপরাধীদের শিকার হচ্ছেন। বিভিন্ন বাহিনীতে সাইবার প্রতারণার ঘটনা দেখা যাচ্ছে। এবার সাইবার অপরাধীরা সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী ‘বিএসএফ’-এর ১০০তম ব্যাটালিয়নের দুই জওয়ানকে আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলেছে।
সিপাহী জিডি সুবোধ রাম এবং হাবিলদার এনএ মহেশ কুমার সিংয়ের হোয়াটসঅ্যাপে ‘আয়ুষ্মান ভারত’ শিরোনামে একটি লিঙ্ক এসেছিল। যখন দুই জওয়ান সেই লিঙ্কটিতে ক্লিক করেন, তখন একটি ফাইল ডাউনলোড হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরেই জানা যায় যে, তাদের ক্রেডিট কার্ড থেকে কেউ তিনটি মোবাইল ফোন কিনে নিয়েছে।
সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সিপাহী জিডি সুবোধ রাম এবং হাবিলদার এনএ মহেশ কুমার সিং একটি হোয়াটসঅ্যাপ ফাইল পেয়েছিলেন। উভয়ের হোয়াটসঅ্যাপে আসা ফাইলটির শিরোনাম ছিল ‘আয়ুষ্মান ভারত’। সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর দুই জওয়ান ফাইলটিতে ক্লিক করেন। ফাইলটি ডাউনলোড হতে শুরু করে। এর কিছুক্ষণ পরেই সুবোধ রাম এবং মহেশ কুমার সিংয়ের মোবাইলে মেসেজ আসে। এই মেসেজগুলো বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের (এসবিআই, অ্যাক্সিস ব্যাংক ও আরবিএল) সাথে নিবন্ধিত ছিল।
কিছুক্ষণ পরে যখন দুই কর্মী তাদের মেসেজ বক্স দেখেন, তখন তারা হতবাক হয়ে যান। মহেশ কুমার সিংয়ের ক্রেডিট কার্ড থেকে ৪৫,০৭১ টাকা এবং ৪৫,৩১০ টাকার ডেবিট লেনদেন হয়ে যায়। সুবোধ রামের ক্রেডিট কার্ড থেকে ৫৪,৭৩৭ টাকা ডেবিট হয়। বিএসএফের দুই কর্মী বুঝতে পারেননি যে হঠাৎ করে কী ঘটে গেল। তাদের মোবাইল ফোনে টাকা কেটে যাওয়ার মেসেজ চলে আসে, অথচ তারা কোনো লেনদেন করেননি। এর পর তারা বুঝতে পারেন যে তারা সাইবার প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ এবং তদন্ত
বিএসএফ জওয়ানরা প্রথমে তাদের মোবাইল ফোন থেকে সেই ফাইলটি ডিলিট করে দেন, যা কিছুক্ষণ আগে ডাউনলোড করা হয়েছিল। দুই কর্মী তাদের ব্যাংকের কাস্টমার কেয়ারে কথা বলে ক্রেডিট কার্ড ব্লক করিয়ে দেন। সুবোধ রাম এবং মহেশ কুমার সিং অনলাইনে অভিযোগও দায়ের করেন। যখন তারা তাদের ফ্লিপকার্ট অ্যাপ চেক করেন, তখন জানা যায় যে স্ক্যামাররা তাদের ক্রেডিট কার্ড থেকে তিনটি স্যামসাং গ্যালাক্সি মোবাইল ফোন অর্ডার করেছে।
বিশেষ ব্যাপার হলো, এই ফোনগুলো ১৫ মিনিটের মধ্যে সোনু কুমার নামে পাটনার একটি ঠিকানায় ডেলিভারি করা হয়েছিল। দুই জওয়ান সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোতে অভিযোগ দায়ের করেন। এর সাথে জাতীয় সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালে এই ঘটনাটি নথিভুক্ত করা হয়। দ্রুত পদক্ষেপের জন্য অভিযোগের সাথে প্রয়োজনীয় নথিও সংযুক্ত করা হয়েছিল। এর পর বিএসএফের সমস্ত ইউনিট, ট্রেনিং সেন্টার এবং অন্যান্য শাখায় এই ধরনের সাইবার অপরাধ এড়াতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাহিনীকে অনলাইন প্রতারণা সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে।