মুসলিম দেশের বুকে হিন্দু দেবতার ঘর, রহস্যময় বিষধর সাপ পাহারা দেয় এই মন্দিরকে!

ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত প্রাচীন তানাহ লট মন্দিরের এক-তৃতীয়াংশ সম্প্রতি পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। একসময় এটি ধ্বংসস্তূপের দ্বারপ্রান্তে ছিল, কিন্তু জাপান সরকারের সহযোগিতায় ইন্দোনেশিয়া সরকার এর ঐতিহ্য রক্ষা ও সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে। পঞ্চদশ শতকে নীরার্থ নামে এক পুরোহিত এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কিংবদন্তি অনুসারে, নীরার্থ পুরোহিত সমুদ্র পাড়ে ভ্রমণের সময় এই মনোরম স্থানটি আবিষ্কার করেন এবং সেখানে একটি মন্দির নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় পাথরের আকৃতি পরিবর্তন করে এটি একটি হিন্দু মন্দিরে রূপান্তরিত হয়। মন্দিরের পাশে নীরার্থ পুরোহিতের মূর্তিও পূজা করা হয়। এই মন্দিরের সাথে জড়িয়ে আছে অলৌকিক এক বিশাল বিষধর সাপের গল্প, যা বহু বছর ধরে মন্দিরটিকে অশুভ শক্তি থেকে রক্ষা করে আসছে বলে বিশ্বাস করা হয়। স্থানীয়দের মতে, নীরার্থ পুরোহিত তার আধ্যাত্মিক শক্তি দিয়ে এই সাপের সৃষ্টি করেছিলেন।
এই মন্দিরের ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং এর অনন্য স্থাপত্যের কারণে, ১৯৮০ সাল নাগাদ ইন্দোনেশিয়া সরকার এর সংরক্ষণে মনোযোগ দেয়। জাপান সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় মন্দিরের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। এর ফলে প্রাচীন এই হিন্দু মন্দিরটি তার নতুন রূপে মাথা উঁচু করে সমুদ্রের তীরে দাঁড়িয়ে আছে, যা পর্যটকদের কাছে একটি জনপ্রিয় আকর্ষণ। এই পুনর্নির্মাণ শুধু মন্দিরের ভৌত কাঠামোকেই রক্ষা করেনি, বরং এর সাথে জড়িত পৌরাণিক কাহিনী ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকেও বাঁচিয়ে রেখেছে। তানাহ লট মন্দির ইন্দোনেশিয়ার ধর্মীয় সহনশীলতা এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের এক অসাধারণ প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।