কলকাতায় ‘সল্ট থেরাপি’র উত্থান: সত্যিই কি এটি বিজ্ঞানসম্মত?

কলকাতায় ‘সল্ট থেরাপি’র উত্থান: সত্যিই কি এটি বিজ্ঞানসম্মত?

কলকাতার ব্যস্ত শহরে ‘সল্ট থেরাপি’র জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে। সম্প্রতি সুরভী সামন্ত নামে এক নাগরিক একটি সল্ট রুমে প্রবেশ করে অভিভূত হন। “ঘরে ঢুকতেই মনে হল সমুদ্রের ধারে এসে পড়েছি। হালকা নুনের গন্ধ আর সাদা স্ফটিকের দেওয়াল মনকে শান্ত করে,” বলেন তিনি। এই ‘হালোথেরাপি’ নামে পরিচিত পদ্ধতিতে শুষ্ক নুনের কণা শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করানো হয়, যা শ্বাসকষ্ট, ত্বকের সমস্যা ও স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে বলে দাবি করা হয়। কলকাতার অভিজাত এলাকায় সল্ট কেভ ও রুমগুলো এখন নতুন আকর্ষণ।

সল্ট থেরাপির প্রক্রিয়ায় একটি বিশেষ ঘর ব্যবহার করা হয়, যেখানে দেওয়াল ও মেঝে নুনের ব্লকে ঢাকা থাকে। একটি যন্ত্রের মাধ্যমে মাইক্রো-নুন কণা বাতাসে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এই পরিবেশে বসে বা শুয়ে সময় কাটানো হয়, প্রায়শই মিউজিক বা মেডিটেশনের সঙ্গে। বিদেশে এই থেরাপি বহুদিন ধরে জনপ্রিয় হলেও, কলকাতায় এটি এখনও নতুন। তবে, এর বৈজ্ঞানিক কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

চিকিৎসা বিজ্ঞান এই থেরাপির প্রভাব নিয়ে সন্দিহান। মায়ো ক্লিনিকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “শুষ্ক নুন ফুসফুসে গিয়ে কোনো জাদুকরী উপকার করে না।” অ্যাজমা বা ব্রঙ্কাইটিস রোগীদের জন্য এটি ক্ষতিকরও হতে পারে। কিছু গবেষণায় অ্যালার্জির ক্ষেত্রে সাময়িক উপকারের কথা বলা হলেও, দীর্ঘমেয়াদি ফলাফলের কোনো প্রমাণ নেই। কলকাতার চিকিৎসক ডা. অমিতাভ সেন জানান, “এটি একটি সম্পূরক পদ্ধতি হতে পারে, তবে মূল চিকিৎসার বিকল্প নয়।”

সল্ট থেরাপি কলকাতার ওয়েলনেস সংস্কৃতির অংশ হলেও, এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি এখনও দুর্বল। শরীরের জন্য নুন গুরুত্বপূর্ণ হলেও, অতিরিক্ত নুনের ঝুঁকি এড়াতে চিকিৎসকের পরামর্শ অপরিহার্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *