রাজধানীর পেছনের কাহিনি: জানুন কীভাবে হয় একটি দেশের রাজধানী নির্বাচন?

কোনও দেশের রাজধানী নির্বাচন শুধু ভৌগোলিক সিদ্ধান্ত নয়, এর পেছনে রয়েছে ইতিহাস, রাজনীতি ও প্রশাসনিক কৌশল। রাজধানী, ইংরেজিতে ‘ক্যাপিটাল’, ল্যাটিন শব্দ ‘ক্যাপিতালাইজ’ থেকে এসেছে, যার অর্থ শীর্ষ বা মুখ্য। এই শহরগুলি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান কার্যালয়, ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও কখনও কখনও সীমান্তবর্তী অঞ্চলের প্রশাসনিক শক্তি বাড়াতে নির্বাচিত হয়। “রাজধানী নির্বাচন একটি দেশের পরিচয় ও কৌশলগত ভারসাম্যের প্রতীক,” বলছেন ভূগোলবিদ ড. সৌমিত্র বসু।
অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরার উদাহরণ সামনে আনলে দেখা যায়, রাজধানী নির্বাচনের পেছনে রাজনৈতিক সমঝোতা কাজ করেছে। সিডনি ও মেলবোর্নের মধ্যে বিরোধের জেরে ক্যানবেরাকে রাজধানী করা হয়। “এটি ছিল দুই শহরের মধ্যে আপসের ফল,” বলেন ইতিহাসবিদ প্রফেসর জন হ্যারিস। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্বাধীনতার পর রাজধানী নির্বাচন নিয়ে উত্তর-দক্ষিণ বিতর্ক তৈরি হয়। আলেক্সান্ডার হ্যামিলটন উত্তরে, আর টমাস জেফারসন ও জেমস ম্যাডিসন দক্ষিণে রাজধানী চাইলেও, জর্জ ওয়াশিংটন নদীর তীরে একটি নতুন শহরের পরিকল্পনা করেন, যা পরে তাঁর নামে ওয়াশিংটন ডিসি হিসেবে পরিচিতি পায়।
স্পেনের মাদ্রিদের কাহিনি আরও আকর্ষণীয়। ষোড়শ শতকে মাদ্রিদ ছিল জনশূন্য, গুরুত্বহীন শহর। রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ সেখানে একটি প্রাসাদে বসবাস শুরু করেন, এবং ধীরে ধীরে মাদ্রিদ রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কেন্দ্রে পরিণত হয়। কাজাখস্তানের আস্তানা (বর্তমানে নুর-সুলতান) ১৯৯৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি নুরসুলতান নাজারবায়েভের ইচ্ছায় রাজধানী হয়। এর আগের নাম আকমলা, যার অর্থ ‘সাদা কবর’, পরিবর্তন করে আস্তানা রাখা হয়। রাজধানী নির্বাচনের এই গল্পগুলি ইতিহাস, কৌশল ও মানুষের সিদ্ধান্তের এক অনন্য মিশ্রণ।