মাছেদের কীভাবে বুঝাবো আমাদের সীমানা? — জানুন ভারতীয় জেলেদের অসাধারণ গল্প

ভারত ও শ্রীলঙ্কার আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সীমারেখা (IMBL) বরাবর মাছ ধরতে গিয়ে বারবারই বিপদের মুখে পড়ছেন তামিলনাড়ুর মৎস্যজীবীরা। তাঁদের অভিযোগ, মাছেরা কোনো দেশের সীমানা বোঝে না। মাছের ঝাঁকের পিছু ধাওয়া করে তাঁরা প্রায়শই শ্রীলঙ্কার জলসীমায় প্রবেশ করেন, আর তখনই শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনীর হাতে আটক হন বা তাঁদের উপর গুলি চালানো হয়। অনেক সময় তাঁদের নৌকাও বাজেয়াপ্ত করা হয়, যা তাঁদের জীবিকার উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এই অনিশ্চয়তা নিয়ে সমুদ্রে পাড়ি জমানো তাঁদের কাছে এক নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার।
ইটিভি ভারত মার্চ মাসে কাচ্চাথিভু দ্বীপের সেন্ট অ্যান্টনি গির্জার বার্ষিক উৎসবে ভারতীয় ও শ্রীলঙ্কার মৎস্যজীবীদের সঙ্গে কথা বলেছিল। মৎস্যজীবীরা জানান, রামেশ্বরামের কাছে সামুদ্রিক সম্পদ কমে যাওয়ায় তাঁদের গভীর সমুদ্রে যেতে হয়। সেখানেই শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনীর হাতে ধরা পড়ার ঝুঁকি বাড়ে। তাঁদের প্রশ্ন, “আমাদের জন্য আপনারা সীমানা তৈরি করতে পারেন, কিন্তু মাছের জন্য কি তা সম্ভব?” একজন মৎস্যজীবী জানান, একটি মাছ ধরার ট্রিপের জন্য শুধু ডিজেলের খরচই ৭৫,০০০ টাকা, এছাড়াও শ্রমিকের মজুরি দিতে হয়।
২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী ১,১৯৪ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে আটক করেছে এবং একই সময়ে ৭ জন ভারতীয় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত ১৪০ জন মৎস্যজীবী আটক হয়েছেন। এই সমস্যার সমাধানে উভয় দেশের সরকারের মধ্যে আলোচনা প্রয়োজন বলে মৎস্যজীবী সংগঠনগুলো মনে করে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শ্রীলঙ্কা সফরে মৎস্যজীবীদের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং তিনি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দ্রুত মৎস্যজীবী ও তাঁদের নৌকা মুক্তির উপর জোর দিয়েছেন। মৎস্যজীবীরা আশা করছেন, এই উদ্যোগ তাঁদের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান করবে।