বাবার মৃতদেহ আলমারিতে লুকিয়ে রাখলেন ছেলে, দুই বছর পর চাঞ্চল্যকর ফাঁস

জাপানের টোকিওতে এক মর্মান্তিক ঘটনা সামনে এসেছে, যা শুনে স্তম্ভিত সকলে। শেষকৃত্য সম্পন্ন করার মতো আর্থিক সংগতি না থাকায় এক ব্যক্তি তাঁর মৃত বাবাকে প্রায় দু’বছর ধরে আলমারিতে লুকিয়ে রেখেছিলেন। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ৫৬ বছর বয়সী নবুহিকো সুজুকির বাবা মারা যান। আর্থিক সংকটের কারণে তিনি বাবার শেষকৃত্যের খরচ জোগাড় করতে পারেননি, তাই মৃতদেহটি নিজের বাড়িতে একটি আলমারির ভেতরে রেখে দেন। দীর্ঘ সময় ধরে বিষয়টি গোপন ছিল, যার ফলে মৃতদেহটি পচে কঙ্কালে পরিণত হয়। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই দেশজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে যখন নবুহিকো নিজের রেস্তোরাঁ এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখেন, যা স্থানীয়দের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি করে। তাঁরা পুলিশকে খবর দিলে নবুহিকোর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। পুলিশ আলমারির ভেতর থেকে কঙ্কালটি উদ্ধার করে এবং নবুহিকোকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, বাবা আচমকা মারা যাওয়ার পর শেষকৃত্যের বিপুল খরচ বহন করা তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না, তাই তিনি এমন চরম পথ বেছে নেন। প্রাথমিকভাবে অপরাধবোধে ভুগলেও, পরে বিষয়টি তাঁর কাছে স্বাভাবিক হয়ে যায়। এমনকি, পুলিশি তদন্তে নবুহিকোর বিরুদ্ধে বাবার পেনশনের টাকা নয়ছয় করার অভিযোগও উঠেছে, যা ঘিরে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
এই ঘটনা জাপানের সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই নবুহিকোর এমন কাজকে কঠোরভাবে সমালোচনা করেছেন, তবে কেউ কেউ আবার আর্থিক সংকট এবং প্রিয়জনের আকস্মিক মৃত্যুতে সৃষ্ট মানসিক চাপকেও এর কারণ হিসেবে দেখছেন। জাপানে শেষকৃত্যের উচ্চ খরচ নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। একজন ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, তাঁর বাবার শেষকৃত্যের জন্য প্রায় ১৪ হাজার ডলার (প্রায় ১২ লক্ষ ভারতীয় টাকা) খরচ হয়েছিল, যা অনেকের পক্ষেই বহন করা কঠিন। এই ঘটনা আর্থিক দুর্গতি এবং প্রিয়জন হারানোর যন্ত্রণার এক ভয়াবহ পরিণতি তুলে ধরেছে।