আজ যে দুবাই আকাশছোঁয়া অট্টালিকা আর বিলাসবহুল জীবনযাত্রার জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত, তার জন্মকথা শুনলে অনেকেই অবাক হবেন। রূপকথার মতো শোনালেও সত্যি, এই জমকালো মহানগরী একসময় ছিল মৎস্যজীবীদের একটি সাধারণ গ্রাম। বানি ইয়াস নামক একটি জনজাতি এই গ্রামে বসবাস করত এবং তাদের প্রধান জীবিকা ছিল সমুদ্রে মাছ ধরা। এই গ্রামটি ১৮৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা ছিল মরুভূমির বুকে এক অখ্যাত বসতি।

শুধু মাছ ধরাই নয়, এই জনজাতির মানুষেরা সমুদ্রের গভীর থেকে মুক্তো সংগ্রহ করতেন। এখানকার জলে প্রচুর ঝিনুক পাওয়া যেত এবং সেই ঝিনুক থেকে সংগৃহীত মুক্তো বিক্রি করেই তাদের জীবন চলত। সেসময় চারদিকে শুধু বালি আর দিগন্তবিস্তৃত সমুদ্র ছাড়া আর কিছুই ছিল না। একটি নিতান্তই অখ্যাত মৎস্যজীবীদের গ্রাম ছিল সেটি, যার ভবিষ্যৎ হয়তো কেউই কল্পনা করতে পারেনি।

ধীরে ধীরে এই গ্রামের আশ্চর্য পরিবর্তন আসে। মৎস্যজীবী জনজাতির হাতে স্থাপিত এই গ্রামে ক্রমে একটি বন্দর তৈরি হয়, যা গ্রামের গুরুত্ব বাড়াতে থাকে। একসময় সেই বন্দরই গ্রামটিকে একটি ব্যস্ত নগরে রূপান্তরিত করে এবং সেই নগরই একদিন বিশ্ব মানচিত্রে ‘দুবাই’ নামে পরিচিতি লাভ করে। বিশ্বের উচ্চতম অট্টালিকা বুর্জ খলিফার শহর, বিলাসবহুল জীবনযাত্রার প্রতিচ্ছবি এই দুবাই, যা একসময় একটি ছোট্ট, প্রান্তিক মৎস্যজীবীদের গ্রাম ছিল, তা বিশ্বাস করা কঠিন। মরুভূমির বুকে একটি মৎস্যগ্রামের এমন অভাবনীয় উত্থান সত্যিই বিস্ময় জাগায়।