ইন্ডিয়া গঠবন্ধনের চাকা কি ফুটো হয়ে গেল? কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্যে উত্তেজনা

নয়াদিল্লি: ইন্ডিয়া গঠবন্ধনের ভবিষ্যৎ নিয়ে কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা পি. চিদম্বরমের একটি বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন আরেক কংগ্রেস নেতা সলমান খুরশিদ, যিনি গঠবন্ধনের দুর্বলতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। এই মন্তব্যগুলো থেকে স্পষ্ট যে গঠবন্ধনের অভ্যন্তরে সবকিছু ঠিকঠাক নেই, এবং এটি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে মনে হচ্ছে।
চিদম্বরম, সলমান খুরশিদ ও মৃত্যুঞ্জয় সিংহ যাদবের বই ‘কনটেস্টিং ডেমোক্রেটিক ডেফিসিট’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, “ইন্ডিয়া গঠবন্ধনের ভবিষ্যৎ ততটা উজ্জ্বল নয়, যতটা মৃত্যুঞ্জয় বলেছেন। আমি নিশ্চিত নই যে গঠবন্ধন এখনও অটুট আছে।” তিনি বিজেপির সাংগঠনিক শক্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, “বিজেপি কোনও সাধারণ রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি যন্ত্রের পিছনে আরেকটি যন্ত্র, যা ভারতের সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করে।” খুরশিদ এই বক্তব্যের সমর্থনে বলেন, “চিদম্বরমের কথা থেকে স্পষ্ট যে ২০২৯-এর নির্বাচনের জন্য আমাদের একটি বড় লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”
এই বক্তব্য বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনে আরজেডি-নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া গঠবন্ধন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জেডি(ইউ)-নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র বিরুদ্ধে লড়বে। খুরশিদ বলেন, “গঠবন্ধনের প্রয়োজনীয়তা আমরা মেনেছি, কিন্তু এটিকে শক্তিশালী করতে আরও কাজ করতে হবে।” ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া গঠবন্ধন ২৩৫টি আসন জিতলেও, এনডিএ ২৯৩টি আসন নিয়ে এগিয়ে ছিল। বিহারে আরজেডি-কংগ্রেসের মধ্যে কিছু মতপার্থক্য প্রকাশ পেয়েছে, বিশেষ করে তেজস্বী যাদবের নেতৃত্ব নিয়ে।
চিদম্বরম ও খুরশিদের মন্তব্য গঠবন্ধনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত দেয়। বিহারে কংগ্রেস আরজেডি-র পাশে থাকলেও, নেতৃত্ব ও আসন ভাগাভাগি নিয়ে উত্তেজনা রয়েছে। এক্স-এ পোস্টে তেজস্বী যাদব বলেন, “ইন্ডিয়া গঠবন্ধন বিহারে বিজেপি-নীতীশ সরকারকে উৎখাত করতে ঐক্যবদ্ধ।” তবে, কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ ও গঠবন্ধনের সমন্বয়ের অভাব নির্বাচনের আগে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।