চাণক্যের সতর্কবাণী: যে ঘরে সুখ আসে না

প্রাচীন ভারতের মহান পণ্ডিত আচার্য চাণক্যের নীতি আজও জীবনের পথপ্রদর্শক। অর্থনীতি ও নীতিশাস্ত্রের এই জনক কিছু পরিবার ও ঘরের কথা বলেছেন, যেখানে সুখের ছায়া পড়ে না। তাঁর মতে, এমন জায়গায় থাকলে বা যাওয়া হলে জীবনে অশান্তি ও দুর্দশা বাড়ে। কোন কোন ঘর এড়িয়ে চলা উচিত, তা নিয়ে চাণক্যের উক্তি আজও প্রাসঙ্গিক।
আইনহীন ঘর: জঙ্গলের সমতুল্য
চাণক্য বলেছেন, যে ঘরে সদস্যদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা বা সমাজের প্রতি লজ্জা নেই, সেটি বন্য জঙ্গলের চেয়ে কম নয়। এমন পরিবারে অশান্তি, বিশৃঙ্খলা ও সমস্যা লেগেই থাকে। একজন সমাজবিজ্ঞানী ব্যাখ্যা করেন, “যেখানে নিয়মের তোয়াক্কা নেই, সেখানে স্থিতিশীলতা থাকে না।” চাণক্য সতর্ক করে বলেছেন, এমন ঘরে পা না রাখাই ভালো, কারণ এর নেতিবাচক প্রভাব অন্যদের জীবনেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
অসৎ উপার্জনের ঘর: সুখের শত্রু
যে বাড়িতে ভুল পথে অর্থ আনা হয়, সেখানে সুখ কখনো টেকে না—এমনটাই বলেছেন চাণক্য। তিনি উল্লেখ করেন, অসৎ উপায়ে রোজগার করা টাকা সমৃদ্ধি আনে না, বরং দুঃখ ও অস্থিরতা বাড়ায়। একজন অর্থনীতিবিদ বলেন, “অনৈতিক উপার্জন শুধু আইনি ঝুঁকিই নয়, মানসিক অশান্তিও ডেকে আনে।” চাণক্যের পরামর্শ, এমন পরিবার থেকে দূরে থাকলে জীবনে শান্তি ও সফলতা বজায় থাকে।
মায়ের অভাবে নির্জন ঘর
চাণক্যের অন্যতম গভীর উক্তি, “যে ঘরে মা নেই, সে ঘর জঙ্গলের মতো।” তিনি বিশ্বাস করতেন, মা পরিবারের মূল স্তম্ভ। মায়ের অনুপস্থিতিতে ঘরে উষ্ণতা, স্নেহ ও স্থিতি হারায়। এক গৃহিণী বলেন, “মায়ের হাতের ছোঁয়া ছাড়া ঘর শুধুই দেয়াল।” আমাদের সমাজে এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে, যেখানে মায়ের অভাবে পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। চাণক্যের এই কথা আজও সত্য।
চাণক্যের নীতির প্রাসঙ্গিকতা
চাণক্যের ‘নীতিশাস্ত্র’ শুধু রাজনীতি বা অর্থনীতির জন্য নয়, দৈনন্দিন জীবনের জন্যও পথপ্রদর্শক। তিনি পরিবারের গঠন ও আচরণের উপর জোর দিয়েছেন, কারণ এটি ব্যক্তি ও সমাজের ভিত্তি। আধুনিক গবেষণাও দেখায়, যে পরিবারে নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা থাকে, সেখানে সুখ ও সমৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি। চাণক্যের এই উপদেশ আজকের ব্যস্ত জীবনে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক।
কী শিক্ষা নেবেন?
চাণক্যের কথা থেকে স্পষ্ট, জীবনে সুখ ও শান্তি চাইলে পরিবারের পরিবেশ ও আচরণের দিকে নজর দিতে হবে। আইনহীনতা, অসৎ উপার্জন ও মায়ের অভাব—এই তিনটি বিষয় ঘরকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। তাই তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, এমন জায়গা এড়িয়ে চলুন এবং নিজের জীবনেও এই নীতি মেনে চলুন।