ডায়াবেটিসে হাড়ের শক্তি হ্রাস, গবেষণায় ফ্র্যাকচারের উচ্চ ঝুঁকির সতর্কতা

ডায়াবেটিসকে সাধারণত রক্তে শর্করার রোগ হিসেবে বিবেচনা করা হলেও, এর ক্ষতিকর প্রভাব শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে, ডায়াবেটিস শুধু চোখ, কিডনি বা হৃদয় নয়, হাড়ের উপরও গভীর প্রভাব ফেলে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাড় ভঙ্গুর হয়ে যায়, ফলে সাধারণ মানুষের তুলনায় ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি অনেক বেশি। “ডায়াবেটিস রোগীদের হাড়ের গঠন ধীরে ধীরে দুর্বল হয়, যা বাইরে থেকে বোঝা যায় না,” বলেন এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ড. প্রিয়া শর্মা।
গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিসে দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তে শর্করার মাত্রা হাড়ের কোষগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যা হাড়ের নমনীয়তা এবং শক্তি হ্রাস করে। টাইপ-১ এবং টাইপ-২ উভয় ডায়াবেটিসই হাড়ের ক্ষতি করে, তবে টাইপ-১-এ ঝুঁকি বেশি, কারণ এটি অল্প বয়সে শুরু হয় এবং দীর্ঘ সময় ধরে চলে। ইনসুলিনের ঘাটতি বা অকার্যকারিতা হাড় গঠনের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। এছাড়া, ডায়াবেটিসে স্নায়ু দুর্বলতা এবং দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের কারণে ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে, যা ফ্র্যাকচারের অন্যতম কারণ। “একটি ছোট আঘাতও গুরুতর ফ্র্যাকচারের কারণ হতে পারে,” বলেন অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ড. রাহুল মেহতা।
ডায়াবেটিস রোগীদের কোমর, মেরুদণ্ড এবং হাত-পায়ের হাড়ে ফ্র্যাকচারের সম্ভাবনা বেশি। কখনও কখনও কোনো উল্লেখযোগ্য আঘাত ছাড়াই হাড় ভেঙে যায়। এই ঝুঁকি কমাতে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি। ডায়েটে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার এবং নিয়মিত হালকা ব্যায়াম হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। বাড়িতে ফিসলন রোধ এবং রাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা পড়ে যাওয়া রোধ করতে পারে। “নিয়মিত পরীক্ষা এবং সঠিক জীবনযাপন ডায়াবেটিস রোগীদের হাড়ের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ,” বলেন ড. শর্মা। এই গবেষণা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য হাড়ের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।