কাজের মাঝে মানসিক শান্তি, ৫ সহজ উপায়ে থাকুন চাপমুক্ত

আধুনিক জীবনে কাজের চাপ এখন প্রতিটি পেশাজীবীর অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী। ডেডলাইন, মিটিং আর লক্ষ্য পূরণের দৌড়ে মানসিক ক্লান্তি ও হতাশা এখন সাধারণ। তবে, কিছু সহজ ও বৈজ্ঞানিক কৌশল অবলম্বন করলে কাজের মাঝেও মানসিক চাপ কমিয়ে শান্ত ও উৎপাদনশীল থাকা সম্ভব। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে গড়া পাঁচটি কার্যকর উপায় জানিয়ে দিচ্ছি।
১. ছোট বিরতি, বড় প্রভাব
একটানা কাজ মস্তিষ্ককে ক্লান্ত করে। মায়ো ক্লিনিকের গবেষণা বলছে, প্রতি ঘণ্টায় ৫ মিনিটের বিরতি মনোযোগ ফিরিয়ে আনে। “এই সময়ে জানালা দিয়ে প্রকৃতি দেখুন বা এক গ্লাস জল পান করুন,” বলেন মনোবিজ্ঞানী ডা. সুপ্রিয়া রায়। এটি শরীর ও মনকে পুনরুজ্জীবিত করে কাজে গতি ফেরায়।
২. গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের জাদু
হঠাৎ চাপ বাড়লে ‘বক্স ব্রিদিং’ অভ্যাস করুন। চার সেকেন্ড ধরে শ্বাস নিন, চার সেকেন্ড ধরে রাখুন, তারপর ধীরে ছাড়ুন। হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিংয়ের মতে, এটি হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিক করে মানসিক শান্তি আনে। ডা. রায় বলেন, “দিনে তিনবার এই অনুশীলন চাপ কমাতে অসাধারণ কাজ করে।”
৩. কাজের তালিকা তৈরি করুন
একসঙ্গে অনেক কাজ মাথায় ঘুরলে চাপ বাড়ে। প্রতিদিন একটি ‘টুডু লিস্ট’ তৈরি করে অগ্রাধিকার ঠিক করুন। ফোর্বসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কাজ ভাগ করে নিলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। ডিজিটাল টাস্ক ম্যানেজার বা হাতে লেখা তালিকা—দুটোই কার্যকর। একটি কাজ শেষ হলে যে তৃপ্তি আসে, তা চাপ কমায়।
৪. সহকর্মীদের সঙ্গে বন্ধন
কর্মক্ষেত্রে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাপ কমায়। “সহকর্মীদের সঙ্গে হালকা গল্প বা একসঙ্গে চা খাওয়া মনকে হালকা করে,” বলেন এইচআর বিশেষজ্ঞ রাহুল শর্মা। ভেরিওয়েল মাইন্ডের গবেষণা বলছে, সামাজিক সংযোগ মানসিক শক্তি যোগায় এবং কাজে আগ্রহ বাড়ায়।
৫. ডিজিটাল ডিটক্সের শক্তি
সারাদিন স্ক্রিনের সামনে থাকলে মন একঘেয়ে হয়। দুপুরের খাবারের সময় মোবাইল দূরে রাখুন বা অফিসের ছাদে হাঁটুন। এপিএ-র মতে, স্বল্প সময়ের ডিজিটাল ডিটক্স মনোযোগ বাড়ায়। এই ছোট অভ্যাস মানসিক চাপ কমিয়ে আপনাকে আরও ফোকাসড করে।
মানসিক চাপ পুরোপুরি এড়ানো যায় না, তবে এই পাঁচ কৌশল—বিরতি, শ্বাস-প্রশ্বাস, তালিকা, সম্পর্ক ও ডিটক্স—নিয়মিত চর্চা করলে ব্যস্ত দিনও হয়ে উঠবে সহনীয়। আজ থেকেই শুরু করুন এবং চাপমুক্ত জীবনের পথে এগিয়ে যান।