হাই ব্লাড প্রেশার: নীরব ঘাতক কেন এত বিপজ্জনক? জানুন লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়

হাইপারটেনশন বা হাই ব্লাড প্রেশার, যাকে ‘নীরব ঘাতক’ বলা হয়, বর্তমানে একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে উঠেছে। এটি হৃদরোগ, হার্ট ফেলিওর এবং ব্রেন হেমারেজের মতো প্রাণঘাতী অবস্থার কারণ হতে পারে। সিনিয়র কার্ডিওলজিস্ট ডা. সুনীল কাটিয়াল জানান, “হাইপারটেনশনের কোনো সুস্পষ্ট লক্ষণ প্রাথমিকভাবে দেখা যায় না, তবে এটি ধীরে ধীরে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি করে।” উচ্চ রক্তচাপ ধমনী ফেটে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়, যা জীবনের জন্য মারাত্মক হতে পারে।
হাইপারটেনশনের কারণ: ডা. কাটিয়ালের মতে, মানসিক চাপ হাইপারটেনশনের প্রধান কারণ। এছাড়া, অনিয়মিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ঘুমের অভাব, ধূমপান, মদ্যপান এবং স্থূলতাও এর জন্য দায়ী। প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষণগুলো হালকা হয়, যেমন মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, ক্লান্তি বা বুকে অস্বস্তি। তবে, এই লক্ষণ উপেক্ষা করলে রোগটি স্থায়ী হয়ে যায়, এবং আজীবন ওষুধ সেবনের প্রয়োজন হতে পারে। ডা. কাটিয়াল বলেন, “লাপরবাহি হলে হাইপারটেনশন জীবনের উপর ক্রমাগত হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।”
প্রতিরোধ ও চিকিৎসা: হাইপারটেনশনের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এই রোগ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ। ডা. কাটিয়াল পরামর্শ দেন, “খাবারে নুনের পরিমাণ কমান, চর্বিযুক্ত খাবার এড়ান, নিয়মিত ব্যায়াম করুন এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।” ধূমপান ও মদ্যপান সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে। ফল, শাকসবজি, ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার এবং পর্যাপ্ত ঘুম হাইপারটেনশনের ঝুঁকি কমায়। নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এই রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে।
হাইপারটেনশন প্রতিরোধযোগ্য, তবে সচেতনতার অভাবে এটি মারাত্মক হয়ে ওঠে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়মতো পদক্ষেপ নিলে এই ‘নীরব ঘাতক’-এর হাত থেকে জীবন বাঁচানো সম্ভব।