সন্তানরা বড় হচ্ছে? ভুলেও এই ৫টি কাজ করবেন না, সম্পর্কে ফাটল ধরতে পারে!

সন্তানরা বড় হচ্ছে? ভুলেও এই ৫টি কাজ করবেন না, সম্পর্কে ফাটল ধরতে পারে!

অভিভাবকত্ব মানে শুধু সন্তানদের নিয়ন্ত্রণ করা বা সব সময় তাদের রক্ষা করা নয়, বরং ধীরে ধীরে তাদের স্বাধীনতা দেওয়াও এর একটি অংশ। এর মানে এই নয় যে সময়ের সাথে সাথে অভিভাবকরা সন্তানদের উপর তাদের অধিকার দেখানো ছেড়ে দেবেন। কিন্তু যেমন যেমন সন্তানের বয়স বাড়বে, অভিভাবকদের তাদের আচরণ এবং লালন-পালনের পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন আনা উচিত। যখন সন্তান ছোট থাকে, তখন অভিভাবকরা তার জন্য সব সিদ্ধান্ত নেন, প্রতিটি পদক্ষেপে তাকে রক্ষা করেন। কিন্তু সন্তান বড় হওয়ার পরও যদি আপনি একই রকম আচরণ করেন, তাহলে এই অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ এবং অতিরিক্ত সুরক্ষামূলক আচরণ আপনাদের সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতে পারে। তাই নতুন যুগের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া জরুরি এবং এই কাজগুলো সন্তানদের সাথে একেবারেই করা উচিত নয়।

সম্পর্ক নষ্ট এড়াতে যেসব কাজ করবেন না

  • সব কথাতে বাধা দেওয়া: সন্তানরা যেমন যেমন বড় হতে থাকে, তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও বাড়তে থাকে। একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর তারা নিজেদের জীবনের ছোট-বড় সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে। কিন্তু অনেক সময় অভিভাবকরা বুঝতেই পারেন না যে এখন সন্তান বড় হচ্ছে এবং কিছু সিদ্ধান্ত সে নিজেও নিতে পারে। তারা ছোটবেলার মতোই সন্তানের সিদ্ধান্তে বাধা দেন বা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি হস্তক্ষেপ করেন। এর ফলে অনেক সময় সন্তানরা দমবন্ধ অনুভব করে এবং তাদের আত্মবিশ্বাসও কমে যায়।
  • সন্তানের ব্যক্তিগত জীবন না বোঝা: একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর সন্তানরা এতটাই বড় হয়ে যায় যে তাদেরও একটি ব্যক্তিগত স্থানের প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে যদি সন্তান যুবক হয়, তাহলে তার একটি ব্যক্তিগত জীবনও থাকে, যার প্রতি অভিভাবকদের সম্মান জানানো উচিত। সন্তান বড় হওয়ার পরও যদি আপনি তার ব্যক্তিগত চ্যাট, ডায়েরি বা ফোন পরীক্ষা করতে থাকেন, তাহলে এই আচরণ আপনাদের দুজনের মধ্যে দূরত্ব বাড়াতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে পরিপক্কভাবে মোকাবিলা করা প্রয়োজন, যেখানে আপনি সন্তানের উপর বিশ্বাস করবেন এবং তাকে একটি ব্যক্তিগত স্থান দেবেন।
  • নিজের স্বপ্ন সন্তানদের উপর চাপানো: প্রায়শই অভিভাবকরা এই ভুলটি করেন যে তারা তাদের অপূর্ণ স্বপ্নগুলোকে সন্তানদের মাধ্যমে পূরণ করতে চান। নিজের সন্তানদের কাছ থেকে আশা করা ভুল নয়, কিন্তু নিজের আকাঙ্ক্ষা সন্তানের উপর চাপিয়ে দেওয়াও তো ঠিক নয়। সন্তান ভবিষ্যতে কী করতে চায়, তার কেমন জীবনসঙ্গী প্রয়োজন বা তার পছন্দ-অপছন্দ কী; অন্তত এই বিষয়গুলো নির্ধারণের অধিকার সন্তানেরই থাকা উচিত। যদি আপনি তাদের পছন্দ-অপছন্দের খেয়াল না রাখেন, তাহলে ভবিষ্যতে আপনাদের দুজনের সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে পারে।
  • সন্তানদের কথা গুরুত্ব সহকারে না নেওয়া: ছোটবেলায় সন্তানদের কথা গুরুত্ব সহকারে না নেওয়া চললেও, সন্তান বড় হওয়ার পরও যদি আপনি তার কথা এবং তার মতামতকে হালকাভাবে নেন, তাহলে এটি তার মনে তিক্ততা সৃষ্টি করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে সন্তানরা হয় চুপ করে থাকতে শুরু করে বা তাদের বন্ধুদের সাথেই নিজেদের মনের কথা শেয়ার করে। তাদের মনে হতে থাকে যে তাদের অভিভাবকরা তাদের কথা এবং তাদের আবেগগুলোকে গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছেন না। অন্যদিকে, যদি আপনি সন্তানের কথা শোনেন এবং তাদের গুরুত্ব দেন, তাহলে এটি সন্তানের আবেগিক বিকাশের জন্যও ভালো হয় এবং আপনাদের দুজনের সম্পর্কের জন্যও।
  • সন্তানদের অন্যের সাথে তুলনা করা: অনেক অভিভাবক সন্তানরা বড় হওয়ার পরও তাদের ক্রমাগত অন্যদের সাথে তুলনা করতে থাকেন। কখনও ক্যারিয়ার নিয়ে, কখনও চাকরির প্যাকেজ নিয়ে বা কখনও বিয়ে করার মতো ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তেও। যেসব সন্তানের অভিভাবকরা ছোটবেলা থেকেই তাদের ক্রমাগত অন্যদের সাথে তুলনা করে থাকেন, তাদের মনে অভিভাবকদের প্রতি সম্মান কমতে থাকে। তাদের মনে হতে থাকে যে অভিভাবকরা তাদের ভালোবাসেন না বরং তাদের অর্জনকে ভালোবাসেন। অনেক সময় তারা তাদের মনে এতটাই অভিযোগ পুষে রাখেন যে ভবিষ্যতে সম্পর্কটি সম্পূর্ণরূপে খারাপ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে চলে আসে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *