শ্রাবণের আগে এই জিনিসগুলো ঘর থেকে সরিয়ে ফেলুন, বদলে যাবে আপনার ভাগ্য

শ্রাবণ মাস হিন্দু ধর্মে বিশেষ গুরুত্ব রাখে। এই মাসটি সম্পূর্ণরূপে ভগবান শিবের (Lord Shiva) প্রতি উৎসর্গীকৃত। এই সময়ে ভক্তরা বিশেষভাবে শিবলিঙ্গে (Shivling) জল, দুধ, বেলপাতা, ভস্ম, গঙ্গাজল (Gangajal) ইত্যাদি দিয়ে অভিষেক করেন।
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, যে ভক্ত শ্রাবণ মাসে শ্রদ্ধা ও নিয়ম মেনে ভগবান শিব এবং মা পার্বতীর (Maa Parvati) পূজা করেন, তার জীবন থেকে দুঃখ দূর হয় এবং তিনি সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি লাভ করেন। শ্রাবণ মাস শুরু হওয়ার আগে কিছু বিশেষ বিষয় খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরি, যাতে পূজার সম্পূর্ণ ফল পাওয়া যায়। এমন পরিস্থিতিতে জানা দরকার যে কোন জিনিস ঘরে রাখা অশুভ বলে মনে করা হয় এবং শ্রাবণের আগে সেগুলোকে ঘর থেকে সরানো কেন জরুরি।
শ্রাবণের আগে এই জিনিসগুলো ঘর থেকে বের করে দিন
ভাঙা মূর্তি সরিয়ে ফেলুন: যদি আপনার বাড়িতে বা মন্দিরে কোনো দেব-দেবীর ভাঙা মূর্তি থাকে, তাহলে শ্রাবণ শুরু হওয়ার আগেই তা ঘর থেকে সরিয়ে ফেলা উচিত। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, ভাঙা মূর্তির পূজা করা নিষিদ্ধ। এতে সাধক কোনো পূণ্য লাভ করেন না, বরং এর বিপরীতে নেতিবাচক শক্তি (negative energy) ঘরে প্রবেশ করতে পারে। এর কারণে ঘরের পরিবেশ অশান্ত হতে পারে এবং আর্থিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। ভাঙা মূর্তি পবিত্র নদীতে বিসর্জন দেওয়া বা কোনো মন্দিরে যথাযথ পদ্ধতিতে দান করা উচিত।
ছেঁড়া-পুরোনো ধর্মীয় বই রাখবেন না: ধর্মীয় গ্রন্থ এবং বইগুলোকে অত্যন্ত পবিত্র মনে করা হয়, কিন্তু যদি এই বইগুলো ছেঁড়া বা খারাপ অবস্থায় থাকে তবে সেগুলোকে ঘরে রাখা উচিত নয়। এমন বই হয় প্রবাহিত জলে ভাসিয়ে দেওয়া উচিত অথবা অশ্বত্থ গাছের নিচে শ্রদ্ধা সহকারে রেখে দেওয়া উচিত। এমনটা করলে ধর্মীয় मर्यादा রক্ষা হয় এবং ঘরের ইতিবাচক শক্তি (positive energy) বজায় থাকে। যদি এই বইগুলো যথাস্থানে রাখা হয়, তাহলে ঘরে অশুভতা প্রবেশ করতে পারে।
বন্ধ ঘড়ি থেকে দূরে থাকুন: বাস্তুশাস্ত্র (Vastu Shastra) অনুযায়ী, ঘরে বন্ধ ঘড়ি রাখা নেতিবাচকতাকে আমন্ত্রণ জানানোর সমান। বন্ধ ঘড়িকে সময়ের থেমে যাওয়া বা স্থবিরতা মনে করা হয়, যা ঘরের অগ্রগতি থামিয়ে দেয়। এটি বিশেষ করে আর্থিক উন্নতি এবং কর্মের সফলতায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তাই যদি কোনো ঘড়ি বন্ধ হয়ে যায়, তবে হয় সেটিকে দ্রুত ঠিক করিয়ে নিন অথবা ঘর থেকে সরিয়ে দিন। চলমান সময়ের প্রতীক একটি সচল ঘড়ি জীবনে ধারাবাহিকতা এবং ইতিবাচক শক্তি বজায় রাখে।
ইতিবাচক শক্তির জন্য এই ছোট পরিবর্তনগুলো করুন
শ্রাবণের আগে ঘরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং নেতিবাচক জিনিসপত্র সরানো শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটি মানসিক ও আবেগিক শান্তিও প্রদান করে। ঘরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও শান্ত পরিবেশ থাকলে পূজায় মনও ভালো বসে এবং ভগবান শিবের কৃপাও লাভ হয়। একইসাথে, ইতিবাচক শক্তির জন্য তুলসী গাছ লাগানো, নিয়মিত প্রদীপ জ্বালানো এবং শিব মন্ত্র জপ করাও অত্যন্ত ফলদায়ক হয়।
২০২৫ সালে শ্রাবণ কখন শুরু হচ্ছে?
২০২৫ সালে শ্রাবণের পবিত্র মাস ১১ই জুলাই থেকে শুরু হয়ে ৯ই আগস্ট পর্যন্ত চলবে। এই সময়ে সারা ভারতে শিব ভক্তরা বিশেষ পূজা-অর্চনা, ব্রত এবং জলাভিষেক করবেন। ২৩শে জুলাই ২০২৫ তারিখে শ্রাবণ শিবরাত্রি (Sawan Shivratri) পালিত হবে, যা এই মাসের সবচেয়ে বিশেষ দিন। এই দিনেই কাওয়াড় যাত্রা (Kawad Yatra) শেষ হয় এবং শিবলিঙ্গে গঙ্গাজল অর্পণ করা হয়।