আজকাল স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ সাদা নুনের পরিবর্তে পিঙ্ক সল্ট, সৈন্ধব লবণ বা অন্যান্য মিনারেল সল্ট গ্রহণ করছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই লবণগুলিকে ‘স্বাস্থ্যকর বিকল্প’ বলে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, এই প্রবণতা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য একটি ‘নীরব বিপর্যয়’ হয়ে উঠছে।

জেনারেল ফিজিশিয়ান ডাঃ অক্ষত চাধা সম্প্রতি জানিয়েছেন যে, গত দুই বছরে যারা সাদা আয়োডাইজড নুন ছেড়ে পিঙ্ক বা সৈন্ধব লবণ নিয়মিত সেবন করছেন, তাদের মধ্যে থাইরয়েড স্তরে ভারসাম্যহীনতা দ্রুত দেখা যাচ্ছে। তার মতে, এর সমাধান নুন পরিবর্তন করা নয়, বরং মোট নুনের পরিমাণ কমানো।

ডাঃ চাধা বলেছেন যে, পিঙ্ক সল্টে ট্রেস মিনারেলস থাকে যা শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে, কিন্তু এগুলিতে আয়োডিনের পরিমাণ খুবই কম থাকে। সাদা নুনেও আগে আয়োডিন থাকত না, কিন্তু এখন এটিকে ফরটিফাই করে আয়োডিন যোগ করা হয় যাতে এটি থাইরয়েডের মতো রোগ থেকে রক্ষা করে।

সৈন্ধব লবণ স্বাস্থ্যকর নয়, ভারসাম্য প্রয়োজন
গ্লিনিগ্যালস হাসপাতাল, মুম্বাইয়ের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ মঞ্জুষা আগরওয়ালও এই বিষয়ে সহমত পোষণ করেছেন। তিনি বলেছেন যে, আজকাল মানুষ সাদা নুন পুরোপুরি ছেড়ে দেয় এবং এটিই সবচেয়ে বড় ভুল। প্রতিটি নুনে কিছু না কিছু মিনারেলস থাকে, কিন্তু সাদা নুন শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় আয়োডিনের চাহিদা পূরণ করে। এটিকে পুরোপুরি বাদ দেওয়া স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।

FSSAI কেন সাদা নুনকে বাধ্যতামূলক করেছে?
এফএসএসএআই (FSSAI) ভারতে আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যা প্রতিরোধের জন্য একটি স্পষ্ট নির্দেশিকা জারি করেছে যে, কেবলমাত্র আয়োডিনযুক্ত লবণই মানুষের ব্যবহারের জন্য বিক্রি করা যাবে। এই নিয়ম অনুযায়ী, গ্রাহক পর্যায়ে নুনে কমপক্ষে ১৫ পিপিএম (parts per million) আয়োডিন থাকা আবশ্যক।

কাদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন?
ডাঃ চাধা বলেছেন যে, বিশেষ করে যে মহিলারা গর্ভধারণের পরিকল্পনা করছেন বা থাইরক্সিন ওষুধ নিচ্ছেন, তাদের অবশ্যই সাদা আয়োডাইজড নুন সেবন করা উচিত। এছাড়াও, প্রসেসড ফুড, আচার, পাপড় বা রেডিমেড স্ন্যাক্স-এ লুকিয়ে থাকা নুন থেকেও দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।