প্রতি সকালে খালি পেটে জল? হতে পারে এই স্বাস্থ্য সমস্যা, গবেষণায় দাবি

প্রতি সকালে খালি পেটে জল? হতে পারে এই স্বাস্থ্য সমস্যা, গবেষণায় দাবি

লেবুজলকে প্রায়শই একটি স্বাস্থ্যকর সকালের পানীয় হিসেবে ধরা হয়। ওজন কমানো, শরীরকে ডিটক্স করা এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে বলে অনেকেই এটি খালি পেটে পান করেন। এতে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীরের জন্য উপকারী।

কিন্তু কিছু গবেষণা ও বিশেষজ্ঞের মতে, প্রতিদিন খালি পেটে লেবুজল পান করা ক্ষতিকারকও হতে পারে। আসলে লেবুতে সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে, যার pH স্তর বেশ কম। এটি আম্লিক প্রকৃতির হওয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে সেবন করলে শরীরের pH ভারসাম্য, দাঁত এবং হজমতন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। আসুন জেনে নিই লেবুজল পান করার কী কী ক্ষতি হতে পারে।

দাঁত ও হজমে প্রভাব
দিল্লির জিটিবি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ডাঃ অজিত কুমার বলেন যে, প্রতিদিন খালি পেটে লেবুজল পান করলে সবার আগে দাঁতের উপর প্রভাব দেখা যায়। লেবুতে উপস্থিত অ্যাসিড দাঁতের এনামেলকে ধীরে ধীরে ক্ষয় করে দেয়, যার ফলে দাঁতে হলুদভাব, সংবেদনশীলতা এবং ব্যথা অনুভব হতে পারে। অনেক সময় গরম জলে লেবু মিশিয়ে পান করলে এই ক্ষতি আরও দ্রুত হয়। এছাড়াও, এটি পেটের অ্যাসিডিটি বাড়াতে পারে, যার ফলে পেটে জ্বালা, অ্যাসিড রিফ্লাক্স এবং গ্যাস তৈরি হওয়ার অভিযোগ থাকতে পারে। যাদের আগে থেকেই গ্যাস্ট্রিক বা আলসারের সমস্যা আছে, তাদের জন্য এটি আরও বেশি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে এটি বোঝা জরুরি যে, লেবুজল সবার জন্য একইরকম প্রভাব ফেলে না।

লেবুজল পানের সঠিক উপায় কী?
হেলথলাইন (Healthline) অনুযায়ী, লেবুজল পুরোপুরি ক্ষতিকারক নয়, কিন্তু এটি পান করার সঠিক উপায় জানা জরুরি। সবার প্রথমে, এটি প্রতিদিন এবং খালি পেটে পান করা সঠিক নয়। সপ্তাহে ২-৩ বার গ্রহণ করাই যথেষ্ট। এছাড়াও, এটি সবসময় পাতলা করে পান করুন অর্থাৎ ১ চামচ লেবুর রস এক গ্লাস জলে মিশিয়ে পান করুন। যদি আপনি সকালে এটি গ্রহণ করতে চান, তাহলে ব্রেকফাস্টের পর বা দিনের মাঝামাঝি সময়ে (মিড-মর্নিং) নেওয়া ভালো। এই অভ্যাস আপনার পেট এবং দাঁতকে সুরক্ষা দেবে। লেবুজল পান করার পর কুলি করতে ভুলবেন না, যাতে দাঁতের এনামেলকে অ্যাসিড থেকে বাঁচানো যায়। যাদের অ্যাসিডিটি, পিত্তের সমস্যা বা দাঁতে সংবেদনশীলতা আছে, তাদের এটি থেকে দূরে থাকা উচিত।

এই বিষয়গুলি খেয়াল রাখুন
লেবুজলকে সবসময় ভালোভাবে পাতলা করুন।

পান করার পর পরিষ্কার জল দিয়ে অবশ্যই কুলি করুন।

খালি পেটে পান করবেন না, ব্রেকফাস্টের পর বা দিনের মাঝামাঝি সময়ে পান করুন।

যদি দাঁতের স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকে, তাহলে এর সেবন অবিলম্বে বন্ধ করুন।

গ্যাস, অ্যাসিডিটি বা আলসার থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েই গ্রহণ করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *