ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়ার পিছনে লুকিয়ে থাকতে পারে গুরুতর রোগ, জানুন প্রতিরোধ

গ্রীষ্মের তীব্র তাপমাত্রায় ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা। প্রধানত ডিহাইড্রেশনের কারণে এটি ঘটে, যা পর্যাপ্ত জল পানের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু ঠোঁটে পড়ে যাওয়া পাপড়ি বা ক্রমাগত শুষ্কতা কখনও কখনও গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। চিকিৎসকরা জানান, শরীরে ভিটামিন বি-২, বি-১২, ভিটামিন সি এবং আয়রনের ঘাটতি ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। “যদি জল পানের পরও ঠোঁট শুকিয়ে থাকে, তবে এটি গুরুতর রোগের সংকেত হতে পারে,” বলেন ডা. রাকেশ সিনহা, পুষ্টিবিদ।
গ্রীষ্মকালে উচ্চ তাপমাত্রা ত্বক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। ঘন ঘন ঠোঁটে জিভ বোলানো, গরম বাতাসের সংস্পর্শ বা পুষ্টি ঘাটতি ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়াকে ত্বরান্বিত করে। ভিটামিন বি-১২-এর ঘাটতি স্নায়ু এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ব্যাহত করে, যার লক্ষণ হিসেবে স্মৃতিভ্রংশ, বিভ্রান্তি বা ভুলে যাওয়া দেখা যায়। আয়রনের অভাবে রক্তাল্পতা এবং দুর্বলতা হতে পারে, যার প্রাথমিক লক্ষণ হল ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া। ভিটামিন সি-এর ঘাটতি স্কার্ভি রোগের কারণ হয়, যাতে দাঁত আলগা হওয়া, মাড়ি থেকে রক্তপাত এবং ত্বকে লাল দাগ দেখা যায়। “এই লক্ষণগুলি দীর্ঘস্থায়ী হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত,” সতর্ক করেন ডা. সিনহা।
প্রতিরোধের জন্য প্রথমে শরীরে জলর ঘাটতি পূরণ করা জরুরি। দিনে ২-৩ লিটার জল পান করুন এবং ঠোঁটে লিপ বাম ব্যবহার করুন। ভিটামিন বি-২-এর জন্য দুধ, দই, ডিম, বাদাম এবং সবুজ শাকসবজি খান। ভিটামিন বি-১২-এর ঘাটতি পূরণে ডিম, মাছ, দুধ এবং পনির উপকারী। ভিটামিন সি-এর জন্য লেবু, কমলা, আমলকি এবং আয়রনের জন্য পালং শাক, বিটরুট এবং ডালিম খাওয়া যেতে পারে। যদি সমস্যা অব্যাহত থাকে, তবে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ভিটামিন ও আয়রনের মাত্রা পরীক্ষা করানো অত্যন্ত জরুরি। সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং চিকিৎসকের পরামর্শে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।