হার্ট অ্যাটাক কখনো হঠাৎ করে আসে না, মাস খানেক আগে থেকেই এই ৫টি বিপজ্জনক লক্ষণ দেখা দেয়

আজকাল হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছোট থেকে বৃদ্ধ সকল বয়সের মানুষ এতে আক্রান্ত হচ্ছে। অনেকেই মনে করেন হার্ট অ্যাটাক হঠাৎ করে আসে এবং এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।
কিন্তু এটি মোটেও তা নয়। আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞ ডঃ রবিন শর্মার মতে, হার্ট অ্যাটাক অনেক মাস আগে থেকেই লক্ষণ দেখাতে শুরু করে। যা প্রয়োজন তা হল সেই লক্ষণগুলি চিনতে পারা এবং সময়মতো সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন করা।
হার্ট অ্যাটাক নীরব নয়, আমরা কেবল মনোযোগ দিই না
হার্ট অ্যাটাককে প্রায়শই “নীরব ঘাতক” বলা হয় তবে ডাক্তারদের মতে, এটি মোটেও নীরব নয়। শরীর ইতিমধ্যেই আমাদের অনেক লক্ষণ দেয়, যা আমরা তথ্যের অভাবে উপেক্ষা করি। আপনি যদি আপনার হৃদয়কে সুস্থ রাখতে চান, তাহলে এই লক্ষণগুলি বোঝা এবং সময়মতো চিকিৎসা নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ফাস্ট ফুড হার্ট অ্যাটাকের পথ প্রশস্ত করে
আজকাল মানুষ পনির, বার্গার, সামোসা, নান এবং মিহি আটা দিয়ে তৈরি জিনিস প্রচুর পরিমাণে খায়। এই সব জিনিস অস্বাস্থ্যকর চর্বিতে ভরা যা শরীরে LDL কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে। LDL কোলেস্টেরল শিরায় জমা হয়ে রক্ত প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে এবং তারপর এটি হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
হার্ট অ্যাটাকের আগে ৫টি সতর্কতা লক্ষণ
চোখের সামনে মাথা ঘোরা বা অন্ধকার: যদি আপনার বারবার মাথা ঘোরা লাগে অথবা বসা থেকে ওঠার সময় বা বাঁকানোর সময় সামনে অন্ধকার দেখা দিতে শুরু করে, তাহলে এটি বিপজ্জনক হতে পারে। যখন হৃদপিণ্ড দুর্বল হয়ে পড়ে, তখন এটি শরীরে পর্যাপ্ত রক্ত পাম্প করতে অক্ষম হয়। এর ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাব হয় এবং মাথা ঘোরা শুরু হয়। এই লক্ষণটি হৃদপিণ্ডের রক্ত পাম্পিং ক্ষমতা হ্রাসের স্পষ্ট ইঙ্গিত হতে পারে।
পায়ে ফোলাভাব: পা বা গোড়ালিতে ফোলাভাবও একটি গুরুতর লক্ষণ হতে পারে। যখন হৃদপিণ্ড সঠিকভাবে কাজ করে না, তখন শরীরের অতিরিক্ত তরল বেরিয়ে আসতে পারে না। মাধ্যাকর্ষণের কারণে, এই তরল পায়ে জমা হয়, যার ফলে ফোলাভাব হয়। এটি হার্ট ফেইলিউরকে নির্দেশ করে।
সবসময় ক্লান্ত বোধ করা: যদি আপনি কোনও বিশেষ কাজ না করেও সর্বদা ক্লান্ত বোধ করেন, তাহলে এটি স্বাভাবিক নয়। হৃদপিণ্ডের কাজ হল শরীরের প্রতিটি অংশে অক্সিজেন সরবরাহ করা। যখন হৃদপিণ্ড দুর্বল হয়ে পড়ে এবং সঠিকভাবে রক্ত পাম্প করতে অক্ষম হয়, তখন শরীরের পেশীগুলিতে অক্সিজেনের অভাব হয়। এর ফলে পেশী দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ব্যক্তি সর্বদা ক্লান্ত বোধ করেন।
শ্বাসকষ্ট এবং নার্ভাসনেস: হাঁটা, দৌড়ানো বা সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় শ্বাসকষ্ট, নার্ভাস বা অস্থির বোধ করা এবং বসার সাথে সাথেই স্বস্তি বোধ করা – এগুলি সবই এক্সারশনাল ডিসফেসিয়ার লক্ষণ। যখন হৃদপিণ্ডের রক্ত পাম্প করার ক্ষমতা কমে যায়, তখন ফুসফুসে রক্ত জমা হতে শুরু করে এবং শরীর কম অক্সিজেন পেতে শুরু করে। এর ফলে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়, যা হার্ট অ্যাটাকের আগে একটি বড় লক্ষণ হতে পারে।
বুকে ভারী হওয়া বা টানটান ভাব: বুকে ক্রমাগত ভারী হওয়া, ঘাড়, চোয়াল বা বাম হাতে টানটান ভাব বা ব্যথা ছড়িয়ে পড়া, এগুলি সবই এনজিনার লক্ষণ হতে পারে। যখন হৃদপিণ্ড পর্যাপ্ত রক্ত পেতে সক্ষম হয় না, তখন এই লক্ষণগুলি দেখা দেয়। এগুলি উপেক্ষা করা মারাত্মক হতে পারে।
এই বিপদ কীভাবে এড়ানো যায়?
সময় সময় আপনার হৃদয় পরীক্ষা করান। অস্বাস্থ্যকর এবং তৈলাক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন। প্রতিদিন হালকা শারীরিক কার্যকলাপ করুন। চাপ এবং অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। যদি কোনও লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে অবিলম্বে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।