পিরিয়ডের সময় চুল ধোয়া কি সত্যিই উচিত নয়? জেনে নিন আসল সত্য

“পিরিয়ড চলাকালীন চুল ধুও না, এতে শরীর খারাপ হতে পারে!” “এই সময় মাথায় ঠান্ডা জল ঢালা উচিত নয়, চুল ভেজালে মাথা ব্যথা হয়!” আপনিও নিশ্চয়ই এই কথাগুলো কখনো না কখনো শুনেছেন, বিশেষ করে বাড়ির বয়স্ক মহিলাদের মুখ থেকে।
মাসিক বা পিরিয়ড সংক্রান্ত এমন অনেক ধারণা আমাদের সমাজে আজও গভীরভাবে গেঁথে আছে। এর মধ্যে একটি সাধারণ ধারণা হলো যে পিরিয়ডের সময় চুল ধোয়া উচিত নয়। কিন্তু এর কি সত্যিই কোনো বৈজ্ঞানিক কারণ আছে? নাকি এটিও আরেকটি ভ্রান্ত ধারণা যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে চলে আসছে?
পিরিয়ডের সময় চুল ধোয়ার ধারণা কোথা থেকে এল?
ভারতীয় সংস্কৃতিতে পিরিয়ডকে দীর্ঘকাল ধরে অশুদ্ধির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। পুরনো দিনে যখন সুবিধা সীমিত ছিল এবং গরম জল বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ছিল না, তখন মহিলাদের এই দিনগুলিতে বিশ্রাম নিতে এবং শরীরকে ঠান্ডা থেকে রক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হত। এর একটি অংশ ছিল এই দিনগুলিতে মাথায় জল না দেওয়া, যাতে ঠান্ডা বা ক্লান্তি না হয়। ধীরে ধীরে এটি একটি সামাজিক নিয়মে পরিণত হয় যে পিরিয়ডের সময় চুল ধোয়া নিষিদ্ধ।
বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে সত্য কী?
কোনো চিকিৎসা গবেষণা এটি বলে না যে পিরিয়ডের সময় চুল ধুলে কোনো ক্ষতি হয়। এটি সম্পূর্ণভাবে একটি মিথ যা কেবল ঐতিহ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি, বিজ্ঞানের উপর নয়। যদি খুব ঠান্ডা জল ব্যবহার করা হয় তবে মাথা ব্যথা বা ক্লান্তি হতে পারে, কিন্তু তা পিরিয়ডের কারণে নয়, বরং তাপমাত্রার কারণে। যদি আপনি গরম বা উষ্ণ জলে স্নান করেন এবং চুল ধোন, তাহলে এটি কেবল সতেজতাই দেয় না, বরং শরীরের দুর্গন্ধ এবং ব্যাকটেরিয়া থেকেও মুক্তি দেয়।
চুল ধুলে কি পিরিয়ডের ফ্লো বাড়ে?
অনেকেরই ধারণা যে চুল ধুলে রক্তপাত বেশি হতে পারে। যদিও এটি কেবল একটি ভ্রান্ত ধারণা। গরম জলে স্নান করলে রক্ত প্রবাহ কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে, যার ফলে শরীর হালকা এবং আরাম অনুভব করে। কিন্তু এটি ক্ষতিকারক নয়।
কোন বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন?
খুব ঠান্ডা জল ব্যবহার করবেন না।
মাথা ধোয়ার পর চুল ভালোভাবে শুকিয়ে নিন।
যদি বেশি ক্লান্তি থাকে তবে বিশ্রাম নিন, এটিকে বাধ্যবাধকতা বানাবেন না।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন, যাতে সংক্রমণ থেকে বাঁচতে পারেন।