গীতার ৭টি উপদেশে লুকিয়ে আছে ব্যক্তিত্ব উন্নয়নের মন্ত্র, মেনে চললে প্রশংসিত হবেন সর্বত্র!

গীতার ৭টি উপদেশে লুকিয়ে আছে ব্যক্তিত্ব উন্নয়নের মন্ত্র, মেনে চললে প্রশংসিত হবেন সর্বত্র!

আজকের দিনে আমাদের ব্যক্তিত্ব সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যখনই আমরা কোনো ইন্টারভিউ (interview)-এর জন্য কোথাও যাই, তখন আমাদের ব্যক্তিত্বই দেখা হয়। শুধু ইন্টারভিউ কেন, আপনার ব্যক্তিত্ব আপনাকে যেকোনো সম্পর্ক আরও ভালোভাবে চালাতে সাহায্য করে।

আপনার ব্যক্তিত্ব দিয়েই আপনার ইম্প্রেশন তৈরি হয়। কিন্তু আপনি কি জানেন, শ্রীকৃষ্ণ হাজার হাজার বছর আগেই ব্যক্তিত্ব বিকাশের পথ দেখিয়েছিলেন? ব্যক্তিত্ব মানে শুধু আপনার পোশাক নয়, আপনার চিন্তা, আপনার ব্যবহারও। গীতায় লুকিয়ে আছে এমন অনেক “মন্ত্র” যা ব্যক্তিত্ব বিকাশে সাহায্য করবে। আসুন, জেনে নিই গীতার সেই প্রধান উপদেশগুলো যা আপনার ব্যক্তিত্বকে নতুন দিশা দিতে পারে।

গীতার ৭টি উপদেশ যা আপনার ব্যক্তিত্বকে উন্নত করবে
১. কর্ম করো, ফলের চিন্তা করো না
গীতায় ‘কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন’-এর বার্তা দেওয়া হয়েছে। এর অর্থ হলো – ব্যক্তিকে ফলাফলের চিন্তা না করে কেবল নিজের কর্মে মনোযোগ দেওয়া উচিত। এই চিন্তা মানসিক চাপ এবং অস্থিরতা দূর করে আপনার কাজের প্রতি নিষ্ঠা বাড়ায়।

২. মনের উপর নিয়ন্ত্রণ জরুরি
গীতায় ‘ইন্দ্রিয়াণি পরাণ্যাহুরিন্দ্রিয়েভ্যঃ পরং মনঃ’-এর উপদেশ দেওয়া হয়েছে। এর মানে হলো, যে ব্যক্তি তার ইন্দ্রিয় এবং মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, সেই প্রকৃত জ্ঞানী এবং ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপনকারী। এটি আপনার মধ্যে শৃঙ্খলা এবং ধৈর্য আনবে।

৩. সমতার মনোভাব গ্রহণ করুন
গীতায় ‘সমত্বং যোগ উচ্যতে’-এর কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ সুখ-দুঃখ, সাফল্য-ব্যর্থতা, লাভ-ক্ষতি – এই সবকিছুর মধ্যে যে ব্যক্তি সমানে থাকে, সেই প্রকৃত যোগী। এটি ব্যক্তিকে মানসিকভাবে শক্তিশালী এবং আবেগিকভাবে স্থিতিশীল করে তোলে।

৪. সন্দেহ নয়, বিশ্বাস জরুরি
গীতায় ‘সংশয়াত্মা বিনশ্যতি’-এর মন্ত্র দেওয়া হয়েছে। এর মানে হলো, যে ব্যক্তি প্রতিটি বিষয়ে সন্দেহ করে, তার বিনাশ নিশ্চিত। নিজের উপর বিশ্বাস থাকলে আপনার মধ্যে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বাড়বে।

৫. ক্রোধ ও লোভ ত্যাগ করুন
গীতায় ‘কাম এষ ক্রোধ এষ রজোগুণসমুদ্ভবঃ’-এর উপদেশ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, ক্রোধ এবং কামনা মানুষকে পতনের দিকে নিয়ে যায়। ক্রোধ ও লোভ ত্যাগ করলে আপনার মধ্যে শান্ত, ভারসাম্যপূর্ণ এবং প্রভাবশালী আচরণের সৃষ্টি হবে।

৬. জ্ঞান ও বিবেকের বিকাশ করুন
গীতায় ‘তদ্বিদ্ধি প্রণিপাতেন পরিপ্রশ্নেন সেবয়া’-এর উপদেশ দেওয়া হয়েছে। এর মানে হলো, প্রকৃত জ্ঞান সেবা, শ্রদ্ধা এবং জিজ্ঞাসার মাধ্যমে লাভ করা যায়। এই চিন্তা ব্যক্তিকে নম্র, নতুন কিছু শেখার জন্য আগ্রহী এবং সামাজিকভাবে আকর্ষণীয় করে তোলে।

৭. আত্মা অমর-অবিনশ্বর
গীতায় ‘ন জায়তে ম্রিয়তে বা কদাচিৎ’-এর কথা বলা হয়েছে। এর অর্থ হলো, আত্মার কোনো জন্ম-মৃত্যু নেই, তা শাশ্বত। এই দৃষ্টিভঙ্গি মানুষকে মৃত্যুর ভয় থেকে মুক্ত করে জীবনের আসল উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত করে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *