স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ হবে এবং মনোযোগও বাড়বে, শীর্ষ নিউরোসার্জন দিলেন এমন টিপস যা খুব কাজে আসবে

স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ হবে এবং মনোযোগও বাড়বে, শীর্ষ নিউরোসার্জন দিলেন এমন টিপস যা খুব কাজে আসবে

আধুনিক জীবনযাত্রায় স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়া এবং মনোযোগের অভাব খুবই সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসলে, ব্যস্ত জীবনযাপন থেকে শুরু করে টেনশন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার ওপর পড়ে।

এমন পরিস্থিতিতে, একজন শীর্ষ নিউরোলজিস্টের দেওয়া কিছু টিপস নিচে দেওয়া হলো, যা আপনার স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ করতে এবং মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করবে।

কী কারণে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়?
টেনশন ও দুশ্চিন্তা: ক্রমাগত মানসিক চাপ নেওয়ার ফলে কর্টিসল হরমোনের (cortisol hormone) মাত্রা বাড়ে, যা মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস (hippocampus) এলাকায় প্রভাব ফেলে। মস্তিষ্কের এই অংশটিই স্মৃতিশক্তির জন্য দায়ী।

ঘুমের অভাব: অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে মস্তিষ্কের কোষগুলো রিচার্জ হতে পারে না। এর প্রভাবও মনোযোগ এবং স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়ার ওপর পড়ে।

পুষ্টির অভাব: ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড (Omega-3 fatty acids), ভিটামিন বি (Vitamin B) এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (antioxidants) এর অভাবেও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য খারাপ হয়।

স্ক্রিন টাইম: আজকাল মানুষের বেশিরভাগ সময় স্মার্টফোন এবং কম্পিউটারে কাটে। এগুলো বেশি ব্যবহার করার কারণেও মনোযোগ নষ্ট হয়।

বয়সের প্রভাব: বয়স বাড়ার সাথে সাথে মস্তিষ্কের কোষগুলো দুর্বল হতে পারে, যার প্রভাব স্মৃতিশক্তির ওপর পড়ে।

রোগের কারণে সমস্যা: ডায়াবেটিস (diabetes), হাইপারটেনশন (hypertension) এবং থাইরয়েডের (thyroid) মতো রোগও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

অ্যাসিটাইলকোলিন কী?
অ্যাসিটাইলকোলিন (Acetylcholine) একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিউরোট্রান্সমিটার (neurotransmitter), যা আমাদের মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের (nervous system) মধ্যে সংকেত প্রেরণের কাজ করে। এটি স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ, চিন্তা করার ক্ষমতা এবং পেশীর কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। যখন অ্যাসিটাইলকোলিনের মাত্রা কমে যায়, তখন মানুষের ভুলে যাওয়া, মনোযোগের অভাব এবং পেশীর দুর্বলতার মতো সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে।

এই পদ্ধতিগুলো উপকারী হতে পারে
নিউরোলজিস্ট ডাঃ অরুণ এল. নায়েক (Dr. Arun L. Naik) এর মতে, মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য সুষম খাদ্য (balanced diet) অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রে ওমেগা-৩ (Omega-3) সমৃদ্ধ খাবার যেমন মাছ, আখরোট (walnuts) এবং ফ্ল্যাক্স সিড (flax seeds) মস্তিষ্কের জন্য উপকারী। আসলে, ওমেগা-৩ নিউরনগুলোর (neurons) মধ্যে যোগাযোগ উন্নত করে। এছাড়াও, ব্লুবেরি (blueberries), স্ট্রবেরি (strawberries) এবং পালং শাকের (spinach) মতো খাদ্যদ্রব্য মস্তিষ্ককে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস (oxidative stress) থেকে রক্ষা করে। অন্যদিকে, ডিম, সবুজ পাতাযুক্ত সবজি এবং গোটা শস্য থেকে ভিটামিন বি১২ (Vitamin B12) এবং ফোলেট (folate) পাওয়া যায়, যা মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

এই বিষয়গুলোও মাথায় রাখুন
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য প্রতিদিন এক মুঠো বাদাম এবং বীজ খান। এছাড়াও, আপনার ডায়েটে সপ্তাহে ২-৩ বার মাছ বা তিসির তেল অন্তর্ভুক্ত করুন। একইসাথে, দুধ বা তরকারিতে হলুদ মিশিয়ে খান। খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি ব্যায়াম করাও জরুরি। আসলে, ব্যায়াম রক্ত ​​সঞ্চালন উন্নত করে, যার ফলে মস্তিষ্কে বেশি অক্সিজেন এবং পুষ্টি উপাদান পৌঁছায়। যদি আপনি প্রতিদিন ৭-৯ ঘন্টা ঘুমান, তাহলে মস্তিষ্কের কোষগুলো পুনর্গঠন এবং মেরামতের জন্য পর্যাপ্ত সময় পায়। শুধু শারীরিক ব্যায়ামই নয়, মানসিক ব্যায়ামও মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখে। পাজল (puzzles), ক্রসওয়ার্ড (crosswords) বা সুডোকুর (sudoku) মতো মানসিক ব্যায়াম নিউরাল কানেকশনকে (neural connections) শক্তিশালী করে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *