শুধুমাত্র তামাক নয়, পেটের ক্রমাগত গ্যাস এবং কোষ্ঠকাঠিন্যও হতে পারে ক্যান্সারের প্রধান কারণ, জেনে নিন কীভাবে

যখনই ক্যান্সারের কথা ওঠে, বেশিরভাগ মানুষ এর কারণ হিসেবে তামাক বা অ্যালকোহলকে দায়ী করেন। কিন্তু আজকের জীবনযাত্রা এবং ভুল খাদ্যাভ্যাসের কারণে কিছু খুব সাধারণ সমস্যা—যেমন ক্রমাগত গ্যাস হওয়া এবং পুরনো কোষ্ঠকাঠিন্য—শরীরে গুরুতর রোগের জন্ম দিতে পারে।
পেটের গ্যাস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য খুবই সাধারণ সমস্যা। যখন এই সমস্যাগুলি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে এবং বারবার হয়, তখন এটি কেবল হজমের সমস্যা থাকে না; এটি কোনো গুরুতর রোগেরও লক্ষণ হতে পারে। বৈজ্ঞানিক ও চিকিৎসা গবেষণা থেকে জানা যায় যে, পুরনো কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ক্রমাগত গ্যাস হওয়া কোলন ক্যান্সার (বৃহদন্ত্রের ক্যান্সার) বা পেট সম্পর্কিত অন্য ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
যখন আমাদের অন্ত্র সময় মতো পরিষ্কার হয় না, অর্থাৎ কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা চলতে থাকে, তখন বিষাক্ত পদার্থ শরীর থেকে বের হওয়ার পরিবর্তে অন্ত্রেই জমা হতে থাকে। এই টক্সিনগুলি ধীরে ধীরে অন্ত্রের দেয়ালের ক্ষতি করে। এর ফলে কোষগুলিতে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা যায়, যা পরবর্তীতে ক্যান্সার কোষে রূপান্তরিত হতে পারে। একইভাবে, বারবার গ্যাস হওয়া, ঢেঁকুর ওঠা বা পেট ফুলে থাকাও এই ইঙ্গিত দেয় যে আপনার হজম প্রক্রিয়া সঠিকভাবে কাজ করছে না।
গ্যাস হওয়ার প্রধান কারণ
প্রসেসড ফুড, ভাজা-পোড়া জিনিস, দীর্ঘ সময় ধরে খালি পেটে থাকা বা বারবার চা-কফি পান করা। এই অভ্যাসগুলি হজমকারী এনজাইমকে দুর্বল করে দেয়, যার ফলে পেটে অ্যাসিড তৈরি হতে থাকে। যখন এই অবস্থা দীর্ঘকাল ধরে চলে, তখন এটি গ্যাস্ট্রিক আলসার, অ্যাসিড রিফ্লাক্স এবং শেষ পর্যন্ত ক্যান্সারের মতো গুরুতর রোগের কারণ হতে পারে।
গ্যাস থেকে ক্যান্সার হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, কোলন ক্যান্সারের রোগীদের মধ্যে শুরুতে কিছু সাধারণ লক্ষণ দেখা যায়, যেমন দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভার হয়ে থাকা, মলত্যাগে অসুবিধা, খিদে না পাওয়া এবং ক্লান্তি। কিন্তু আমরা প্রায়শই এই লক্ষণগুলিকে উপেক্ষা করে ভুল করি। তাই, যদি আপনার কয়েক সপ্তাহ বা মাস ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস, পেটে ব্যথা বা মলত্যাগের অভ্যাসে কোনো পরিবর্তন মনে হয়, তাহলে এটিকে হালকাভাবে নেবেন না।
কীভাবে প্রতিরোধ করবেন
- প্রচুর জল পান করুন
- ফাইবারযুক্ত খাবার খান
- দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকবেন না, সময় মতো খাবার খান
- সময় থাকতে চিকিৎসকের কাছে পরীক্ষা করান
- প্রসেসড ও তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন