এই কারণেও আসতে পারে হার্ট অ্যাটাক, বেশিদিন উপেক্ষা করলে হতে পারে প্রাণঘাতী!

আজকাল যুবকদের মধ্যে রোগের ঝুঁকি বাড়ছে, তবে তার চেয়েও গুরুতর সমস্যা হল হার্ট অ্যাটাক। এটি একটি জরুরি অবস্থা, যেখানে সরাসরি প্রাণের ঝুঁকি থাকে। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে জীবন বাঁচানো বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। আমাদের দেশেও হার্ট অ্যাটাক একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে উঠেছে এবং মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ এটি। এমনকি অনেক সেলিব্রিটিও হার্ট অ্যাটাকের শিকার হচ্ছেন। সম্প্রতি শেফালি জারিওয়ালার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে মৃত্যু হয়েছে। এর আগেও গায়ক কেকে, সিদ্ধার্থ শুক্লা, কন্নড় সুপারস্টার পুনীত রাজকুমার, রাজু শ্রীবাস্তব-এর মতো অনেক তারকার হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হয়, ক্রনিক স্ট্রেসও হার্ট অ্যাটাকের একটি বড় কারণ।
ক্রনিক স্ট্রেস কী এবং এর প্রভাব
ফোর্টিস হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের পরিচালক ড. বিনীত বাঙ্গা ব্যাখ্যা করেছেন যে ক্রনিক স্ট্রেস অস্থায়ী চাপ থেকে ভিন্ন। অস্থায়ী চাপ অল্প সময়ের জন্য থাকে এবং শরীর দ্রুত তা থেকে সেরে ওঠে। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী বা দীর্ঘস্থায়ী চাপ যদি কারো ওপর ক্রমাগত বজায় থাকে, তবে তা আমাদের শরীর ও মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। এটি এতটাই বিপজ্জনক যে আমাদের হৃদপিণ্ডের ধমনীগুলিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যখন আমরা দীর্ঘ সময় ধরে চাপে থাকি, তখন শরীরে কর্টিসল এবং অ্যাড্রেনালিন হরমোন ক্রমাগত তৈরি হতে থাকে। এই হরমোনগুলো স্ট্রেস বাড়ায়, যার ফলে হৃদস্পন্দন দ্রুত হয়, রক্তচাপ বাড়ে এবং হৃদপিণ্ডের শিরাগুলি সংকুচিত হয়। রক্ত জমাট বাঁধারও একটি কারণ হল অতিরিক্ত স্ট্রেস, যা হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।
ক্রনিক স্ট্রেস মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি সেরোটোনিনের ঘাটতি ঘটায়, যা বিষণ্ণতা ও উদ্বেগ বাড়ায়। ডোপামিনের অভাবে আনন্দের অনুভূতি কমে যায়। নোরপাইনফ্রাইন হরমোনের অভাবে মানুষের মধ্যে অস্থিরতা ও ভয় বেড়ে যায়। দীর্ঘস্থায়ী চাপ মস্তিষ্ক, মেজাজ, স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তা করার ক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে। ক্রনিক স্ট্রেসের চিকিৎসা বাড়িতে করা কঠিন, কারণ এই পরিস্থিতিতে রোগীর একজন মনোবিজ্ঞানীর প্রয়োজন হয়। তাই, রোগীদের বিশেষজ্ঞের সাথে দেখা করার পরামর্শ দেওয়া হয় এবং এর পাশাপাশি কিছু জীবনযাত্রার পরিবর্তনও গ্রহণ করা যেতে পারে। চিকিৎসকের সাথে দেখা করা এই কারণেও জরুরি কারণ অতিরিক্ত চাপ নিউরোডিজেনারেটিভ রোগ এবং আলঝেইমারের মতো মানসিক রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।