আপনার মেয়ের বয়স ৮-১৬? দুধের সাথে এই বিশেষ পাউডার মিশিয়ে দিন, শরীর পাবে অফুরন্ত শক্তি, বাড়বে সুস্থতা!

বয়সের বিভিন্ন পর্যায়ে মেয়েদের শরীরে নানা ধরনের হরমোনের পরিবর্তন দেখা যায়। বিশেষ করে বয়ঃসন্ধিকাল যে কোনো মেয়ের জন্য আবেগিক এবং শারীরিক পরিবর্তনের এক গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময়ে শরীরে হরমোনের পরিবর্তন হয়, যার প্রভাব স্বাস্থ্যের ওপর পড়ে। পিরিয়ড শুরু হওয়ার সময় দুর্বলতা, খিটখিটে মেজাজ এবং শরীর ব্যথার মতো সমস্যা দেখা দেয়। যদি আপনার মেয়ের বয়স ৮-১৬ বছর হয়, তার পিরিয়ড শুরু হয়ে গেছে বা শুরু হতে চলেছে, তাহলে তাকে দুধের সাথে একটি বিশেষ পাউডার মিশিয়ে দিন। এই বিষয়ে পুষ্টিবিদ মনপ্রীত কালরা (যিনি দিল্লি ইউনিভার্সিটি থেকে নিউট্রিশন-এ মাস্টার্স করেছেন এবং হরমোন ও গাট হেলথ কোচ) বিস্তারিত তথ্য দিচ্ছেন।
৮-১৬ বছর বয়সে শরীরে অনেক হরমোনের পরিবর্তন হয়। পিরিয়ড শুরু হওয়ার পর অনেক সময় চুল পড়া বেড়ে যায়, ব্রণ বেশি হয় বা মেজাজ ক্লান্ত এবং খিটখিটে থাকে। এটি মানসিক চাপ, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, হিমোগ্লোবিন কম থাকা এবং অনেক পুষ্টির অভাবের কারণে হতে পারে। এই পাউডারটি শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়, বয়ঃসন্ধিকালে হরমোনকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে, শক্তি বাড়ায় এবং ক্লান্তি দূর করে। এটি দুধের সাথে মিশিয়ে পান করলে মেজাজের পরিবর্তন কমে, মনোযোগ উন্নত হয়, হজম এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো হয়।
কেন এই পাউডারটি এত উপকারী?
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজারে উপলব্ধ অনেক মিল্ক পাউডার চিনিতে ভরপুর থাকে এবং এগুলো শরীরের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে না। এমন পরিস্থিতিতে, প্রোটিন এবং আয়রন সমৃদ্ধ এই ঘরে তৈরি মিল্ক পাউডারটি ক্রমবর্ধমান বয়স এবং হরমোনের ওঠানামার মধ্যে উপকারী।
বাদাম: ভিটামিন-ই এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সমৃদ্ধ, যা শরীরকে শক্তি দেয় এবং হরমোন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
কালো তিল: আয়রন এবং ক্যালসিয়ামে ভরপুর, যা লোহিত রক্তকণিকাকে শক্তিশালী করে।
কুমড়ার বীজ: ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন এবং জিঙ্কে ভরপুর, যা হরমোন এবং পিরিয়ড সংক্রান্ত সমস্যা কমাতে উপকারী।
এলাচ: হজমশক্তি উন্নত করে এবং শরীরকে পুষ্টি শোষণ করতে সাহায্য করে।
বীট: ক্লান্তি কমাতে এবং রক্ত প্রবাহ উন্নত করতে কাজ করে। এটি শরীরে ফোলেটের মাত্রাও বাড়ায়।
খেজুর: দ্রুত শক্তি দেয় এবং শরীরে রক্তের অভাব পূরণ করে।
গুড়: আয়রনে ভরপুর এবং হিমোগ্লোবিনের মাত্রা উন্নত করে।
শুকনো আদা (শোঁঠ): হজমশক্তি উন্নত করতে এবং আয়রন শোষণে সাহায্য করে।
ছাতু: প্রোটিন, ফাইবার এবং আয়রনের একটি ভালো উৎস। এটি গাট হেলথ উন্নত করতে এবং শরীরে রক্ত বাড়াতে সাহায্য করে।
কীভাবে তৈরি করবেন এই স্বাস্থ্যকর পাউডার?
উপকরণ:
বাদাম- ৫টি
কালো তিল- ১ টেবিল চামচ
কুমড়ার বীজ- ১ টেবিল চামচ
এলাচ- ২টি
বীট পাউডার- ১ টেবিল চামচ
খেজুর পাউডার- ১ টেবিল চামচ
গুড়ের পাউডার- ১ টেবিল চামচ
শুকনো আদা (শোঁঠ) পাউডার- আধা চা চামচ
ছাতু পাউডার- ৪ টেবিল চামচ
প্রস্তুত প্রণালী:
১. বাদাম, কালো তিল, কুমড়ার বীজ এবং এলাচ হালকা করে ভেজে নিন।
২. এবার একটি ব্লেন্ডারে বীট, খেজুর, গুড় এবং শুকনো আদার পাউডার একসাথে ব্লেন্ড করে নিন।
৩. এর সাথে ছাতু পাউডার মিশিয়ে ভালো করে মেশান।
৪. এই মিশ্রণটি ঠান্ডা বা গরম দুধের সাথে মিশিয়ে পান করুন।
এই ঘরে তৈরি পুষ্টিকর পাউডার আপনার মেয়ের ক্রমবর্ধমান বয়সে তার শরীরকে প্রয়োজনীয় শক্তি এবং পুষ্টি দেবে, যা তাকে সুস্থ ও শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করবে।